যশোর রেলস্টেশনে ভারতফেরত দুই যাত্রীকে আটকে রেখে হয়রানি, মালামাল লুট ও চাঁদাবাজির ঘটনায় পুলিশের দুই কনস্টেবলের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় গত সপ্তাহে এ মামলা হয়।মঙ্গলবার (২৮ জুন) দুপুরে খুলনা রেলওয়ে পুলিশের পুলিশ সুপার মো. রবিউল হাসান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। গত (৫ জুন) রাতে যশোর রেলস্টেশনে হয়রানির ঘটনা ঘটে। হয়রানির শিকার টি এম রাশিদুল হাসান সিরাজগঞ্জের সালঙ্গা থানার ধুপিল মেহমানশাহী গ্রামের বাসিন্দা ও ঢাকা তেজগাঁও কলেজের মাস্টার্সের ছাত্র। ঘটনার পরদিন জিআরপি পুলিশ হেডকোয়ার্টারে অভিযোগ করেন তিনি।
অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ৮ জুন দুপুরে তদন্তে যশোর রেলওয়ে স্টেশনে আসেন সহকারী পুলিশ সুপার মজনুর রহমান। ঘটনার শিকার রাশিদুল হাসানও সিরাজগঞ্জ থেকে যশোরে আসেন। তদন্ত কর্মকর্তা সহকারী পুলিশ সুপার মজনুর রহমান ঘটনাস্থল ঘুরে দেখেন। এ সময় তিনি ভুক্তভোগীসহ স্টেশন মাস্টার আয়নাল হাসান, রেলওয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারী, জিআরপি ফাঁড়ি ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক (এসআই) শহিদুল ইসলাম, ফাঁড়ির কনস্টেবল এবং স্টেশনের বিভিন্ন দোকানের দোকানিদের সঙ্গে কথা বলেন। একই সঙ্গে অভিযুক্ত কনস্টেবলদেরও জবানবন্দি নেন তিনি।সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, তদন্ত শেষে এক সপ্তাহ পর রেলওয়ে জেলার কুষ্টিয়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মজনুর রহমান তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন। তদন্তে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে বলে তিনি প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ঘটনার সঙ্গে জড়িত কনস্টেবল আবু বক্কার ও আতিকুর রহমানের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করা হয়েছে। এর আগেই তাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।পুলিশ সুপার মো. রবিউল হাসান বলেন, যশোর স্টেশনে যাত্রী হয়রানি, চাঁদাবাজির অভিযোগ পাওয়ার পর কুষ্টিয়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মজনুর রহমান তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে অভিযুক্ত দুই পুলিশ কনস্টেবলের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা রুজু হয়েছে। এর আগেই তাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এখন মামলা তদন্তের জন্য তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগের আবেদন করা হয়েছে।ভুক্তভোগী রাশিদুল হাসানের অভিযোগ, রোববার তিনি ভারত থেকে বেনাপোল বন্দর দিয়ে দেশে প্রবেশ করেন। এরপর বাসযোগে রাত ৮টার দিকে যশোর স্টেশনে আসেন সুন্দরবন এক্সপ্রেসে করে বাড়ি (সিরাজগঞ্জ) যাওয়ার জন্য। স্টেশনে অবস্থান করার সময় রেলওয়ে পুলিশ (জিআরপি) কনস্টেবল আবু বক্কর ও আলআমিনসহ সাদাপোশাকধারী আরও তিনজন তার ব্যাগ তল্লাশির নামে ফাঁড়িতে নিয়ে যান।
তিনি আরও জানান, সেখানে পাঁচ ঘণ্টা আটকে রেখে ভারত থেকে আনা পোশাক, প্রসাধনীসহ প্রায় ১৫ হাজার টাকার মালামাল নিয়ে নেন। পরে ভয়ভীতি দেখিয়ে বিকাশের মাধ্যমে পাঁচ হাজার টাকা নিয়ে সাদা কাগজে সই নেন। এরপর রাত দেড়টার দিকে তাকে ছেড়ে দেন। পরে বাধ্য হয়ে প্রাইভেটকার ভাড়া করে বাড়িতে ফেরেন রাশিদুল। এদিকে তারা সঠিক বিচারের দাবি করেছেন। ক্ষমতার বলে যেন বিচার ঘুরে না যায়। আর যাতে কেউ আমার মতো এরকম হয়রানির শিকার না হয়।