ঈদযাত্রায় ঘরমুখো মানুষের বড় শঙ্কার বিষয় মহাসড়কে যানজট। সেই সঙ্গে রাস্তায় খানাখন্দ বাড়ায় দুর্ভোগ। এ বছর কোরবানির ঈদ সামনে রেখে যাত্রীদের যাতে এসব সমস্যায় পড়তে না হয়, তা নিয়ে শুরু হয়েছে প্রস্তুতি। যাত্রা আরামদায়ক ও নির্বিঘ্ন করতে সড়ক মেরামতের কাজ শুরু করেছে সড়ক ও জনপথ অধিদফতর (সওজ)। ঈদের সাত দিন আগেই সব মেরামতকাজ শেষ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে সংশ্লিষ্টদের। সেই সঙ্গে ঈদের সময় মহাসড়কে মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধ করার কথা চলছে।ঈদের আগে সড়ক-মহাসড়কে গরুবাহী ট্রাক চলবে। অন্যদিকে মানুষও ঘরে ফিরবে। দুটো বিষয়ই মাথায় রেখে যানজট এড়াতে পরিকল্পনা হচ্ছে সওজ সূত্র জানিয়েছে। সওজ অধিদফতর, হাইওয়ে পুলিশ, জেলা প্রশাসক ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) সমন্বিতভাবে সড়ক ব্যবস্থাপনা করবে। কীভাবে তা নির্বিঘ্নে করা যায়, এ নিয়ে দফায় দফায় আলোচনা হচ্ছে।এ বিষয়ে জানতে চাইলে সওজ অধিদফতরের মেইনটেন্যান্স সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী জিকরুল হাসান বলেন, বর্তমানে রাস্তার ইঞ্জিনিয়ারিং পার্ট মোটামুটি ঠিক আছে। এনফোর্সমেন্টের বিষয়টা জোরদার করা হলে ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন হবে।ঈদের সময় ঢাকা থেকে উত্তরাঞ্চলে যাওয়ার পথে যানজট লেগে থাকে চন্দ্রায়। এর বড় কারণ রাস্তার দুই পাশের বাস কাউন্টার। এসব কাউন্টারের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা বাসের কারণে যানজট দেখা দেয় মহাসড়কে। এবার বাসের কাউন্টারগুলো রাস্তা থেকে আরো পিছিয়ে দেয়া হচ্ছে, যাতে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক থাকে।চট্টগ্রাম-সিলেট মহাসড়কে যানজট দেখা দেয় নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকায়। এবার ওই পথে চলাচল স্বাভাবিক রাখতে সাইনবোর্ড এলাকার রাস্তা ১০ লেন করা হয়েছে।এদিকে গাজীপুরও ময়মনসিংহের পথে যান চলাচল নির্বিঘ্ন করতে বিআরটিএ প্রকল্পের নিচে প্রস্তুত করা হয়েছে দুই লেনের রাস্তা।পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় এবার দক্ষিণাঞ্চলের প্রায় সব যানবাহনই চলবে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে। অতিরিক্ত গাড়ির চাপে এক্সপ্রেসওয়ে টোল প্লাজায় যানজট হতে পারে। কারণ, টোল নেয়া হচ্ছে ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে।সড়কের সার্বিক বিষয়ে সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলী এ কে এম মনির হোসেন পাঠান বলেন, ঈদযাত্রার প্রস্তুতি গতবারের চেয়ে এবার ভালো। তবে সড়কে চ্যালেঞ্জ হতে পারে পোশাককর্মীদের ছুটি নিয়ে। তবে এক্সপ্রেসওয়েতে টোলের কারণে কোনো যানজট হবে না।এদিকে ঈদে সড়কপথে যাত্রীদের যাতায়াত নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন করার জন্য আজ রবিবার (৩ জুলাই) বিকেলে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগে একটি বৈঠক হবে। সেখানে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের জুমের মাধ্যমে যুক্ত থাকার কথা রয়েছে।বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী বলেন, এবার ঈদে সড়ক যানজটমুক্ত থাকবে। শুধু যানজট নয়, এবার ঈদে দুর্ঘটনাও কমাতে চাই। ৩ জুলাইয়ের সভায় ঈদে সড়কে মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধের বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসতে পারে।সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ সূত্র জানায়, ঈদের আগের ৩ দিন এবং পরের ২ দিন পচনশীল দ্রব্য ছাড়া গরুর গাড়িসহ সব ধরনের গাড়ি বন্ধ রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে। তা ছাড়া, মোটরসাইকেল রাইড শেয়ারিং করে দূরপাল্লার যাত্রী পরিবহনে বন্ধের কথা বলা হচ্ছে।এই বিষয়ে জানতে চাইলে নুর মোহাম্মদ মজুমদার বলেন, মোটরসাইকেলে রাইড শেয়ারিং করে যেন দূরপাল্লার যাত্রী পরিবহন না করা হয়, সে জন্য রাইড শেয়ারিং প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। যদি কেউ নির্দেশনা না মানে, তাহলে আইনগত কঠোর ব্যবস্থা নেবো। তার জন্য যা যা করার দরকার সেগুলো আমরা করবো। আমরা একটা কথাই বলবো আমাদেরকে কঠোর হতে বাধ্যো করবেন না।
ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট