একজন বাবাকে জানি,যিনি মেয়ে হয়েছে শুনে হাসপাতাল যান নি।একজন সহকারী অধ্যাপক বলেন, “আর যাই বলেন মিজান ভাই,মেয়েরে দিয়ে কিচ্ছু হবে না।” আমি বলি,আপনার না মেয়ে আছে! উনি ত্বরিত বলেন, সেইজন্যেই বললাম মেয়েদের দিয়ে কিচ্ছু হয় না। আইয়ামে জাহেলিয়াত প্রবহমান…। নারীর প্রতি দৃষ্টিপাত করি বিবেক দিয়ে…।আপনি কী করে নারীর গর্ভজাত হয়ে নারীবিদ্বেষী হন? এই কথার অর্থ কী এই,আমি নারীকে নিরপরাধ বলছি? তাদের ছলনা নিয়ে,অজ্ঞতা নিয়ে অক্ষমতা নিয়ে আমি সম্যক অবগত আছি। হুম…।কিন্তু কথা হলো, কন্যা হলে জলে ভাসবেন, পুত্র হলে ডাঙায় নাচবেন এই কোন দুরাচার? আপনি কী চণ্ডাল? কত কুপুত্র দাবড়ায় আপনারি কন্যার সম্ভ্রম লুটিতে,লজ্জায় চোখ ঢাকিতে ইচ্ছে করে না!হযরতের কথা বেমালুম ভুলে গেলেন? তিনি যে অমোঘ আর অতুলনীয় নির্দেশ করেছেন মাতৃজাতিকে…।মায়ের সেবা শ্রম সাধনা যাতনা কী করে একচক্ষু হরিণের মত ভুললেন? অনেক কাজেই নারী অপারঙ্গম,এই কথা কোন নারী অস্বীকার করে? আবার নারীর আপনভুবনের অপার রাজ্যে তুমি পুরুষ যে অর্বাচীন সেই খবর কী রাখো?
এই একবিংশ শতকে দাঁড়িয়ে কোন শিক্ষিত লোক যদি কন্যার সংখ্যা নিয়ে উদ্বিগ্ন হন,স্ত্রীকে মারধর করেন,তিনি নির্বিচারে অমানুষ…। তার জন্যে দুইকলম খরচ করে রায় লেখাও অনুচিত। আলহামদুলিল্লাহ, আমার দুইটা কন্যা আছে..তাদের হাসিকান্না ঝগড়া বিবাদ হৈহুল্লোড় আমার মরা গাঙে জোয়ার আনে..।আলহামদুলিল্লাহ। গাঁয়ে শুনেছি, ইশ! মিজান প্রফেসারের যদি পোলা হইতো!!!সেইটা গ্রাম্য মানুষের সরল আর অবুদ্ধিজাত আক্ষেপ। তুমি মিয়া নগরের নাগর! তুমি রাজচাকর! তোমার লেকচার আর্গুমেন্ট জাজমেন্ট রিয়ালি রেয়ার! আর সেই তুমি নারীর প্রতি সহিংস, নিষ্ঠুর…।তোমারে খারিজ করে দিলাম,আমার খাতা হইতে..।সন্তানের চে বড় রহমত দাম্পত্য জীবনে হইবার পারে না। পুত্র হোক,কন্যা হোক; আনন্দে উদ্বেল হই।বলি শুকরান,যাজিলান…।হে পরম তোমার তরে নিঃসীম কৃতজ্ঞতা।
ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট