যশোরে এবার চলতি বছর পাটের আবাদ বৃদ্ধি ও পাটের বাম্পার ফলন হওয়ায় চাষিদের মুখে হাসি ফুটলেও পানির অভাবে পাট জাঁগ দেওয়া (পঁচানো) নিয়ে বিপাকে পড়েছেন যশোর জেলার পাট চাষিরা। তীব্র খরায় খাল-বিলসহ বিভিন্ন ডোবা, নালার পানি শুকিয়ে যাওয়ায় কাঁচা পাট কাটতে পারছে না এ যশোর অঞ্চলের পাট চাষিরা। কোথাও কোথাও পানির অভাবে খেতেই শুকিয়ে যাচ্ছে পাটগাছ।যশোরের মনিরামপুর, কেশবপুর, ঝিকরগাছা, শার্শা সহ বেশ কয়েকটি উপজেলার গ্রাম গুলো ঘুরে দেখা যায়, ছোট বড় খাল-বিলসহ বিভিন্ন ডোবা ও নালার পানি শুকিয়ে যাওয়ায় প্রান্তিক কৃষকরা সোনালী আশেঁর পাট কাঁটতে পারছে না। অনেকেই আবার ভারি বৃষ্টিপাতে বিভিন্ন ডোবা-নালায় পানি ভরাট হওয়ার আশায় পাট কাঁটা শুরু করলেও কাংখিত বৃষ্টির দেখা না পেয়ে পানির অভাবে পাট জাঁগ দেওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। অনেক কৃষক পাট কেঁটে জমির মধ্যেই রেখে দিয়েছেন পাটের আটি। আবার অনেক কৃষক বাধ্য হয়ে শ্যালো মেশিন ও মোটরের পানি দিয়ে পাট জাঁগ দিতে গিয়ে বাড়তি খরচে কারনে লোকসানের সম্মুখীন হচ্ছেন। সেচ দিয়ে জাগ দিয়ে প্রতি বিঘায় খরচ হচ্ছে বাড়তি ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা। এমন অবস্থায় চাষ বৃদ্ধি ও ভালো ফলন হলেও লাভের জায়গায় লোকসান গুনতে হবে বলে জানান এ অঞ্চলের পাট চাষিরা। জেলা কৃষি অফিসের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর যশোর জেলায় পাটের আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ২৫ হাজার ২০০ হেক্টর। এর মধ্যে আবাদ হয়েছে ২৪ হাজার ৮৮০ হেক্টর। ইতিমধ্যে কর্তন করা হয়েছে ১ হাজার ৭৪১ হেক্টর জমির কাঁচা পাট।বৃষ্টির অভাবে একদিকে চাষিরা যেমন রয়েছে মহাবিপদে অন্যদিকে কৃষকরা রোপা আমন ধানও বুনতে পারছেন না। পাট কেটে ওঠানোর পরপরই জমিতে চাষ দিয়ে রোপা আমন ধান বুনেন কৃষকেরা। আর তাই সোনালি আঁশ এখন কৃষকের গলার ফাঁস হয়ে দাঁড়িয়েছে। পানি না থাকায় রোদে নষ্ট হওয়ার উপক্রম হচ্ছে এসব কাঁচা পাট। সদর উপজেলার কচুয়া গ্রামের পাট চাষী আনসার মোড়ল বলেন, “এ বছর আমি আড়াই বিঘা জমিতে পাটের আবাদ করেছি। প্রতি বিঘা জমিতে আমার মোট খরচ হয়েছে প্রায় ২০ হাজার টাকা। এদিকে বৃষ্টি কম হওয়ায় সেলো মেশিন দিয়ে সেচ দিয়ে পাট জাগ দিতে হচ্ছে। ফলে খরচ আরও ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা বেড়ে যাচ্ছে।বাঘারপাড়া উপজেলার ধলগ্রামের পাট চাষী আবুল কালাম বলেন, “এ বছর পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ায় কোথায় পাট জাগ দেওয়ার মতো পর্যাপ্ত পানি নেই। সেচ দিয়ে পাট জাগ দিতে হচ্ছে। এ বছর পাটের বাজারদর কম হয়ে গেলে আমাদের পথে বসা ছাড়া উপায় থাকবে না।”শার্শা উপজেলার উত্তর গোগা গ্রামের সালমা বেগম বলেন, “এ বছর আমি দু-বিঘা জমিতে পাট লাগিয়েছি। শ্রমিক আর সেচ খরচ দিয়ে এ বছর ব্যায় বেশি। এজন্য সরকারের কাছে আমাদের দাবী আমরা যেন ন্যায্য মূল্য টা পাই।এ বিষয়ে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সৌমিত্র সরকার বলেন, এ বছর পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ায় চাষীদের খরচ অনান্য বারের তুলনায় বেশি হয়ে যাচ্ছে। বর্তমান বাজারমূল্য যা আছে তাতে চাষীদের লোকসান হবে না তবে দাম কমে গেলে চাষীরা সমস্যায় পড়বে।কাংখিত বৃষ্টির দেখা মিলবে কবে সেতো অজানা কবে ঘরে উঠবে সোনালী ফসলের সোনালী আঁশ। প্রাপ্য মজুরি পেয়ে হাসি ফুটবে মুখে, এমন বিভোর স্বপ্নে বুক বেঁধে আছেন এই অঞ্চলের প্রান্তিক চাষিরা।তাই সকরে চেয়ে আছেন বৃষ্টির আসায় এবছর যশোরে নেই বৃষ্টির দেখা কি হবে এই পাট চাষিদের মুখে কি ফুটবে হাসি নাকি দেখবে চোখে শর্ষেফুল। আসায় বুকবাধা কৃষক তাই যেন হয় হাসি মুখ দেশে হক অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বড় পাট হক।
ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট