দয়াকরে ২ মিনিট সময় নিয়ে পড়ুন। চরম লেভেলের বাস্তবতা ফুটিয়ে তোলা হয়েছে?আমার এক বন্ধু বিশাল শিল্পপতি। ১০ টার উপর ফ্যাক্টরি, শত কোটি টাকার উপর ব্যাংক লোন। এক মুহূর্তের জন্য শান্তি নেই। সারাদিন ব্যাস্ত দুনিয়ার পেছনে। একদিন তাঁর অফিসে বসে গল্প করছিলাম, এমন সময় তাঁর এক কর্মচারী আসল। তার কোন কারণে কিছু টাকার দরকার। সে ইনিয়ে বিনিয়ে বলল, সে অত্যন্ত অভাবি ব্যক্তি, তাঁকে সাহায্য করার জন্য।আমার বন্ধু হেসে বলল ”যদি অভাবের কথাই বলতে হয়, এই পুরো অফিসে আমার চেয়ে অভাবি আর কেউ নেই। আমরা একটু থতমত হয়ে গেলাম। আমি বললাম ‘আমাদের সবার মিলিয়ে যত সম্পদ আছে তোর একারই তার বেশি আছে।’সে বলল তোদের একটা গল্প শুনাই। তাহলেই আমার অভাবের রহস্য বুঝবি।এক বিশাল ব্যবসায়ি, তাঁর সবই আছে খালি শান্তি নেই। খালি হাহাকার আর টেনশান। চিন্তায় মাথার চুল একটাও বাকি নেই। সে একদিন দেখল তাঁর অফিসের পিয়ন টেবিল মুছছে আর গুনগুন করে গান গাচ্ছে।সে পিয়নকে দেকে বলল এই যে তুমি মনে মনে গান গাও, তোমার কি অনেক সুখ, তোমার মনে কি কোন দুঃখ নেই, কোন হতাশা নেই?।পিয়ন বলে না, হতাশা কেন থাকবে স্যার, আপনি যা বেতন দেন তাদিয়ে আলহামদুলিল্লাহ আমার ভালই চলে যায়। আল্লাহর রহমতে কোন অভাব নেই।ব্যবসাইতো আরো টেনশানে পড়ে গেলেন। ওনার ম্যানেজারকে ডেকে বললেন, আমার সব আছে কিন্তু শান্তি নেই, আর ওই লোককে আমি সামান্য কয়টা বেতন দেই, সে আছে মহা সুখে, এর রহ্স্যটা কি?
ম্যানেজার বলল , রহস্য বললে বুঝবেননা। সত্যই যদি বুঝতে চান তাহলে, ওই পিয়নকে প্রমোশান দিয়ে একটা বড় পোস্টে দিন। আর তাঁকে ১০ লক্ষ টাকা দিয়ে দিন। এরপর দেখুন।ব্যবসায়ি তাই করল। এতোগুলো টাকা, আর এতবড় চাকরি, পেয়ে পিয়ন আনন্দে আত্মহারা। বাসায়ও সবাই খুশি। যেহেতু এখন অফিসার হয়ে গেছে, এখন তো আর টিনের ঘরে থাকা যায়না। কলিগরা কি মনে করবে।প্রথমেই বাসা পরিবর্তন করে আরেকটু অভিজাত এলাকায় এপার্টমেন্টে উঠলো। দেখল, বিল্ডিং এর সবাই সন্তানকে বড় স্কুলে পাঠায়, তাই বাচ্চার স্কুলও চেঞ্জ করতে হল। কিছুদিন পড় বউ ঘ্যনঘ্যন শুরু করলো সবার বাসায় কত দামি আসবাব, ফ্রিজ, টিভি, আর আমাদের বাসায় কিচ্ছু নেই। ওগুলোও কিনতে হোল। এরপর শুরু হোল বাচ্চার প্রাইভেট টিউশান, নানা রকম দাবি দাবা। আগে ঈদে একজোড়া জুতা পেয়েই সবাই কত খুশি হত, আর এখন প্রতি মাসে একজোড়া দিলেও তৃপ্তি নেই।যেহেতু সে এখন বড় চাকরি করে , পরিবারের সবার তাঁর কাছে প্রত্যশাও অনেক। সাধ্যমত চেষ্টা করে, তাও সবার চাহিদা মেটাতে পারেনা। আত্মীয় স্বজন বন্ধু গন তাঁকে অহংকারি ভেবে দুরে সরে গেলো।এদিকে অফিসের সবাই ফলটা/ প্লট এ বুকিং দিচ্ছে। বৌ সারাদিন বাসায় খোটা দেয় , তোমাকে দিয়ে কিছুই হবেনা। ছেলেমেয়র ভবিষ্যৎ অন্ধকার। সে চাকরির ফাকে একটা দুইটা টিউশানি করা শুরু করলো। তাতেও কিছু হয়না। নানাবিধ টেনশান আর দুশ্চিন্তায় তারো মাথার চুল আসতে আসতে কমতে লাগলো।ব্যবসায়ি লক্ষ করলেন ব্যপারটা। উনি বললেন কি ব্যপার তোমাকে এতো বড় প্রমোশান দিলাম, এতো টাকা দিলাম, আর এখন দেখি তুমি আগের মত আর প্রাণবন্ত নেই। ঘটনা কি?সে বলল স্যার , কিছু দুনিয়াবি সম্পদ দিয়েছেন, কিন্তু তাঁর সাথে যে এতো চাহিদা আর অভাব আসবে তাতো আর বুঝিনি। আগে আমার কিছুই ছিলনা, অভাবও ছিলনা। আর এখন যেদিকেই তাকাই , খালি নাই আর নাই। আগে আমার অভাব পড়লেও সেটা ছিল এক দুই হাজারের ব্যপার। কোন ভাবে মেটান যেত। আর এখন আমার অভাব লক্ষ কোটি টাকার। এটা কিভাবে মেটাবো সে চিন্তায় আমার এখন আর রাতে ঘুম আসেনা স্যার।
ব্যবসায়ি বলল, এতদিনে বুঝলাম, আমার মুল অসুখ। একটাকার সম্পদের সাথে ২ টাকার অভাব আসে। যতই দুনিয়ার পিছনে ছুটি কবরের মাটি ছাড়া এই অভাব আর অন্য কিছু দিয়েই পূর্ণ হবেনাআদম সন্তানের যদি স্বর্ণে পরিপূর্ণ একটি উপত্যকা থাকে, তবে সে (তাতে সন্তুষ্ট হবে না, বরং) আরেকটি উপত্যকা কামনা করবে । তার মুখ তো (কবরের) মাটি ছাড়া অন্য কিছু দ্বারা ভর্তি করা সম্ভব নয় । যে আল্লাহর দিকে রুজু করে আল্লাহ তার তওবা কবূল করেন – [বুখারী]জাতির ভবিষ্যত
আজ মোবাইলের কারণে পরিবারের মধ্যে একে অপরের সাথে, ভালো সুসম্পর্ক নেই।
ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট