নিজস্ব প্রতিবেদক
বিএনপির ডাকা সকাল-সন্ধ্যা হরতালে বেনাপোল স্থলবন্দরের কার্যক্রম।আত্মগোপনে নেতাকর্মীরা, স্বাভাবিক বেনাপোল স্থলবন্দরের কার্যক্রম
বিএনপি-জামায়াতের ডাকা সকাল সন্ধ্যা হরতালের প্রভাব পড়েনি দেশের সর্ববৃহৎ স্থলবন্দর বেনাপোলে। দুই দেশের মধ্যে পণ্য আমদানি-রপ্তানিসহ বন্দরের সব কার্যক্রম চলছে স্বাভাবিকভাবে। এছাড়া পাসপোর্টযাত্রীর চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।
রোববার (২৯ অক্টোবর) হরতালে খুলনা-বেনাপোল, কলকাতা-খুলনা মধ্যে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল করেছে। দুরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ থাকলেও বেনাপোল থেকে যশোরের মধ্যে সব ধরনের ছোট যানবাহন চলাচল করেছে। ব্যাংক, বীমা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ অফিস আদালত খোলা ছিল। বন্দরে কার্যক্রম চলেছে পুরোদমে। হ্যান্ডলিং শ্রমিকরা বন্দর অভ্যন্তরে পণ্য লোড আনলোড কাজে ব্যস্ত সময় পাড় করছে।
তবে ভারত থেকে ফেরত আসা বেশ কিছু পাসপোর্টযাত্রী বেনাপোলের বিভিন্ন পরিবহন অফিসে আটকা পড়ে আছে। সন্ধ্যার পর দুরপাল্লার বাস চলাচল করলে তারা গন্তব্যে যাবেন। অনেকে বিকল্প হিসেবে মোটরসাইকেল, ভ্যান, রিকশা ও নসিমনে করেই চলাচল করছে। হরতালের পক্ষে বিপক্ষে কাউকে পিকেটিং করতে দেখা যায়নি। বেনাপোল, শার্শা, নাভারণ ও বাগআঁচড়ার গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পুলিশি টহল দিতে দেখা গেছে।
উপজেলায় মাঠে নেই বিএনপি ও জামায়াতের কোনো নেতাকর্মী। অনেকটাই আত্মগোপনে চলে গেছেন তারা। মূলত গ্রেফতার এড়াতেই কেউ প্রকাশ্যে কোনো কর্মসূচি পালন করতে আসছেন না বলে বিএনপি নেতাদের দাবি। অনেক নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন বড় বড় নেতারা সরকারি দলের নেতাদের সঙ্গে সমঝোতা করে চলেন এ কারণে কোনো আন্দোলন করছেন না এলাকায়।শার্শা উপজেলা বিএনপির শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক আবুল হাসান জহির বলেন, বেনাপোল-শার্শায় অবরোধ হরতাল পালন করা কঠিন ব্যাপার। এখানে হরতাল আহ্বান করলে প্রতিপক্ষ ও পুলিশ জোর প্রতিরোধ গড়ে তোলে। মূলত সহিংসতা এড়ানোর জন্য আমরা এখানে হরতাল কর্মসূচি এড়িয়ে চলি। শুধু বেনাপোল বন্দর নয়, শার্শা, নাভারণ বাগআঁচড়ায় আমরা হরতাল পালন করতে পারি না। এখানকার পরিস্থিতি একটু আলাদা।
শার্শা উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ ইব্রাহিম খলিল বলেন, বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল তখনও আমরা হরতালের পক্ষে মাঠে নামতে পারেনি। হরতালের সময় এখানে কাজ হয়েছে। আসলে বেনাপোল বন্দরকে সচল রাখতে অবরোধ হরতাল থেকে সবাইকে সরে আসতে হবে। অবরোধ হরতালের কারণে দেশের অর্থনৈতিক অবকাঠামো ভেঙ্গে পড়ে।
বেনাপোল পোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল হোসেন ভূঁইয়া ও শার্শা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এস আকিকুল ইসলাম বলেন, হরতালে বেনাপোল বন্দরসহ শার্শা উপজেলার কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পুলিশ টহল দিচ্ছে। যে দলই বিরোধী দলে থাকুক না কেন এখানে হরতাল আসলে হয় না। এখানে জীবনযাত্রা স্বাভাবিক সময়েরই মতো চলে। কোনো ঝামেলা নেই হরতালের দিনে। নেই কোনো পিকেটিং, মিছিল সমাবেশ। এ কারণে এখানে নিরাপত্তা নিয়েও কোনো সমস্যায় পড়তে হয় না আমাদের।
বেনাপোল স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক রেজাউল ইসলাম জানান, হরতালে বেনাপোল কাস্টম হাউজ ও চেকপোস্ট কার্গো শাখায় কাজ চলেছে। এছাড়া ব্যাংক খোলা থাকায় রাজস্ব আদায়ে কোনো প্রভাব পড়েনি। কাস্টম কর্মকর্তা ও ক্লিয়ারিং এজেন্টরা স্বাভাবিক কাজকর্ম করেছে। সকাল থেকে বেনাপোল-পেট্রাপোল স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি স্বাভাবিকভাবে চলেছে।
তিনি আরও বলেন, বন্দরে হরতালের কোনো প্রভাব পড়েনি। ভারত থেকে আসা আমদানি করা পণ্যবাহী ট্রাক থেকে পণ্য আনলোড ও বাংলাদেশি ট্রাকে পণ্য লোড অব্যাহত আছে। দুপুরের পর থেকে এসব ট্রাক পণ্য নিয়ে বন্দর ত্যাগ করতে শুরু করবে। যে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে বন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। ভারত-বাংলাদেশ পাসপোর্টযাত্রী পারাপার স্বাভাবিক রয়েছে।
ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট