রুবেল খান, পূর্বধলা (নেত্রকোনা)
নেত্রকোনা পূর্বধলায় স্বাধীন (৮) নামের এক শিশুর শিকলবন্দী জীবন অর্থের অভাবে চিকিৎসা করাতে পারছেন না পরিবারটি। যতদিন যাচ্ছে মানসিক ভারসাম্যহীন এই ছোট শিশুকে নিয়ে বিপাকে পড়েছেন তার বৃদ্ধা নানি জমেলা খাতুন।
মানসিক ভারসাম্যহীন শিশুটি নেত্রকোনা জেলা
পূর্বধলা উপজেলার আগিয়া ইউনিয়নের আন্দা গ্রামের মৃত সুরুজ আলীর নাতি।
খোঁজ নিয়ে যানা গেছে,স্বাধীন নামের ওই শিশুটির জন্মের আঠারো মাস বয়সে তার মা শিরিনা খাতুন মৃত্যুবরণ করেন, এবং মৃত্যুর কিছুদিন পর থেকে বাবা উধাও, এই শিশুটির ভবিষ্যতে কথা চিন্তা করে বৃদ্ধা নানী জমেলা খাতুন সেই আঠারো মাস বয়স থেকেই লালনপালন করে আসছেন, দিন যত যাচ্ছে এই শিশুটির মানসিক সমস্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে ,এই অসুস্থ ছেলেকে নিয়ে খেয়ে না খেয়ে দিন পার করছেন বৃদ্ধ নানি। সরজমিনে গিয়ে জানা যায় জমেলা খাতুনের স্বামী ২৫ বছর আগে মৃত্যুবরণ করেন তাদের দুই মেয়ে বড় মেয়ের বিয়ে পর স্বামী সন্তান নিয়ে সংসার করছেন। ছোট মেয়ে এক ছেলে জন্ম দেওয়ার আঠারো মাস পর মৃত্যুবরণ করেন। সেই থেকেই অসহায় নানী অন্যের বাড়িতে কাজ করে অনেক কষ্টে জীবন যাপন করছেন,নিজে খাচ্ছেন নাতিকেও খাওয়াচ্ছেন।
জমেলা খাতুনের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়,চাপড়া ঘর কোন রকম কাপড়ের বেড়া দিয়ে রাত্রি যাপন করছেন,বিশুদ্ধ পানি এবং স্বাস্থ্যসম্মত শৌচাগার ব্যবস্থা নেই। ঘরের বিছানায় অসুস্থ অবস্থায় স্বাধীনকে দেখা গিয়েছে। প্রায় সময় উলঙ্গ অবস্থায় ঘুরাফেরা করে শিশুটি কোন রকম ঘর থেকে ছাড়া পেলেই বিভিন্ন দিকে ছোটাছুটি করে, পথচারী পেলে পাঁচ টাকা দাবী করে, অনেক সময় এলাকাবাসী সহ পথচারীরা বিরক্তিবোধ করে এজন্যই ঘরে আটকে রেখেই তার খাওয়া-দাওয়া,ও ঘুমানো ব্যবস্থা করা হয়েছে । দীর্ঘদিন এভাবে থেকে অনেকটাই উচ্ছৃঙ্খল হয়ে পড়েছেন শিশুটি।
স্বাধীনের বয়োবৃদ্ধা নানি জমেলা খাতুন জানান, যখন থেকে নাতির বয়স ২ বছর তখন জ্বর হয়েছিলো সে থেকেই মানসিক সমস্যা লক্ষ্য করছি। গ্রাম্য কবিরাজি চিকিৎসাসহ ধোবাউড়া নামের একটি এলাকায় নিয়ে সেখানে ১৫দিন থেকে কবিরাজের চিকিৎসা দেওয়ার পরও উন্নতি না হওয়াই এরপর পূর্বধলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে একজন ডাক্তার দেখানো হয়েছে কিন্তু ভালো হয়নি।সংসারের অভাব অনটনের কারণে উন্নত চিকিৎসা করানো যাচ্ছে না। নানির উন্নত চিকিৎসার জন্য এলাকার অনেক লোকের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন তিনি।
সরকারের দেয়া বিধবা ভাতার টাকা পান তিনি। বর্তমানে সেই টাকা দিয়ে চলতে দেখা দেয় নানা ধরণের সমস্যা, এলাকার মানুষের সহযোগিতায় এবং আমার একটি গরু ছিলো তা বিক্রি করে ২ শতাংশ জায়গা কিনেছি। সরকারে দেয়া ঘর পেলে হয়তো মানসিক ভারসাম্যহীন নাতিকে নিয়ে মাথা গুজার ঠাই হতো।
তিনি আরও বলেন আমার বাড়িতে টিউবওয়েল নেই অন্যের বাড়ি থেকে পানি এনে খাই সামনে শীতকাল আসছে ভাঙা ঘরে এই ছোট ভারসাম্যহীন নাতিকে নিয়ে কিভাবে থাকবো? সমাজে অনেক দানশীল ব্যক্তি আছে তারা যদি মা হারা এই নাতিটাকে চিকিৎসা করে আমাদের থাকার একটি ব্যবস্থা করে দিতেন তা হলে সারাজীবন তার জন্য দোয়া করতাম।
ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট