বিশ্বনন্দিত পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটাকে ক্রমশই গ্রাস করছে ক্ষুধার্ত সাগর। ছোট হয়ে আসছে কুয়াকাটার মানচিত্র। প্রতি বছরের ন্যায় অমাবস্যা, ও পূর্ণিমায় সাগরে সৃষ্টি হয় প্রচন্ড ঢেউ যাতে বালুক্ষয় বেড়েছে ১৮ কিলোমিটার সৈকত জুড়ে। সৈকতের সাথে থাকা আবাসিক হোটেল কিংসের পাকা ভবনটি উত্তাল ঢেউয়ের ঝাপটায় একেবারেই বিলীন হয়ে গেছে। হুমকির মুখে রয়েছে ক্ষুদ্র ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো।প্রচন্ড ঢেউয়ের তাণ্ডবে বনাঞ্চল ধ্বংস হচ্ছে আর ভাসিয়ে নিয়ে গেছে সৈকতের দৃষ্টিনন্দন ছাতা বেঞ্চ ও অস্থায়ী ঝিনুক মার্কেটটিও। এছাড়া বাঁধের বাইরে থাকা মসজিদ, মন্দির পাকা আধা-পাকা অনেক আবাসিক হোটেল, ট্যুরিস্ট পুলিশ বক্স ও জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে সদ্য চালু হওয়া ট্যুরিজম পার্কটি।
এ সময় কথা হয় স্থানীয় বাসিন্দা মোহাম্মদ জামাল আকনের সাথে। তিনি জানান যে, আমার সংসার টিকিয়ে রাখার জন্য যে ব্যবসাটা করতাম আজ সমুদ্র ভাঙ্গনের কবলে পড়ে, নিজের শেষ সম্বল বিলীন হয়ে গেছে। ছোট একটা চায়ের দোকান ছিল, যেখানে বসে প্রতিনিয়ত হাজার থেকে পনেরশো টাকা ইনকাম করতাম, তাতেই সংসার ছেলে মেয়েদের লেখাপড়া করাতাম, এখন সমুদ্রের কুল প্রান্তর ভাঙ্গনে নিজের শেষ ব্যবসাটা হারিয়ে ফেলেছি। রবিবার সকালে সরেজমিন দেখা যায়, ঢেউয়ের ঝাপটায় অনেক ক্ষুদ্র ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে। অবশিষ্ট অংশ দোকানিরা সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। সমুদ্রের ঢেউ এসে আছড়ে পড়ছে মহসড়কের শেষ সীমানায়। কোথাও দাঁড়ানোর স্থান নেই। পর্যটকরা সৈকতে দাঁড়িয়ে থাকতে পারছেন না। ঢেউ এসে তাদের উপর আছড়ে পড়ছে।স্থানীয়দের মতে, যদি এরকম সমুদ্র সৈকত ভাঙতে থাকে, তাহলে ৫ থেকে ৭ বছর লাগতে পারে মডেল টাউন কুয়াকাটা বিলীন হতে। তাই তাদের সবার দাবি ডিজিটাল পরিকল্পনার মাধ্যমে জানো অতি দ্রুত ভাঙ্গন ঠেকানো হয়।কুয়াকাটা পৌরসভার মেয়র আনোয়ার হাওলাদার জানান, কুয়াকাটা সৈকতকে রক্ষায় সরকার পরিক্ষামূলক ভাবে জিওব্যাগ ও টিউব দিয়েছে। কিন্তু এই সৈকত রক্ষা করা সম্ভব হয়নি বরং সৌন্দর্য নষ্ট হয়েছে। তবে সরকারের বর্তমানে কুয়াকাটাকে নিয়ে হাতে নেয়া ১২শ কোটি টাকার প্রকল্প এই বছরের শেষের দিকে শুরু হবে। আশাকরি এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে কুয়াকাটা সৈকত একটি আন্তর্জাতিক মানের সৈকতে পরিনত হবে।
ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট