জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার আহবান রাষ্ট্রপতির।আগামীকাল ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে হারানোর শোককে শক্তিতে রূপান্তর করে তার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে সকলকে আত্মনিয়োগের আহবান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ।তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালের এই দিনে ঘাতকদের নিষ্ঠুর বুলেটের আঘাতে ধানমন্ডির নিজ বাসভবনে শাহাদাতবরণ করেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তার সাথেই শহীদ হন সহধর্মিণী বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব, পুত্র শেখ কামাল, শেখ জামাল এবং শিশুপুত্র রাসেলসহ নিকট স্বজনদের অনেকে। তিনি ১৫ আগস্টের সকল শহীদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান এবং সৃষ্টিকর্তার নিকট তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন।রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বলেন- জাতির পিতা ছিলেন, বাঙালির স্বপ্নদ্রষ্টা ও স্বাধীনতার রূপকার। ১৯৪৮ সালে সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের নেতৃত্বসহ ১৯৫২ সালের মহান ভাষা আন্দোলন, ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ১৯৫৮ সালের সামরিক শাসন বিরোধী আন্দোলন, ১৯৬২ সালের গণবিরোধী শিক্ষা আন্দোলন, ১৯৬৬ সালের ৬-দফা, ১৯৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান ও ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনসহ বাঙালির মুক্তি ও অধিকারের জন্য পরিচালিত সকল গণতান্ত্রিক ও স্বাধিকার আন্দোলনে তিনি নেতৃত্ব প্রদান করেন। এজন্য তাকে বারংবার কারাগারে পাঠানো হয়।তিনি আরো বলেন, বাঙালির অধিকার আদায়ের ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধু ছিলেন সর্বদাই আপসহীন। পাকিস্তানি শাসক গোষ্ঠীর শত বাধা উপেক্ষা করে ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে লাখো জনতার উদ্দেশ্যে তিনি এক ঐতিহাসিক ভাষণ প্রদান করেন। বজ্রকণ্ঠে তিনি ঘোষণা দেন, এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। এরপর ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা প্রদান করেন। তারই নেতৃত্বে দীর্ঘ ৯ মাস মুক্তিযুদ্ধের পর বাংলাদেশ স্বাধীন হয়।রাষ্ট্রপতি বলেন, ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত ‘সোনার বাংলা’ প্রতিষ্ঠাই ছিলো বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন। এ লক্ষ্যে দেশ স্বাধীনের এক বছরের মধ্যে প্রণয়ন করেন একটি গণমুখী সংবিধান। তিনি সবসময় জনগণের প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস রাখতেন। উন্নয়ন ও স্ব-নির্ভরতা অর্জনের ক্ষেত্রে মানুষের ঐক্যবদ্ধ ও যৌথ প্রচেষ্টাকে তিনি সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব প্রদান করতেন।বাংলাদেশের উন্নয়নের অন্যতম মাইলফলক হিসেবে পদ্মা সেতু ইতোমধ্যে যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হয়েছে। খুব শিগগিরই মেট্রোরেল, কর্ণফুলী টানেলসহ আরো কয়েকটি মেগা প্রকল্পের কাজ শেষ হলে বাংলাদেশের উন্নয়ন, ইতিহাসে নতুন এক অধ্যায়ের সূচনা করবে। ঘাতকের দল বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করলেও তার নীতি ও আদর্শকে মুছতে পারেনি। তার নীতি ও আদর্শ বিশ্বব্যাপী স্বাধীনতাকামী মানুষের অধিকার আদায় এবং শোষণ-নির্যাতনের বিরুদ্ধে গণজাগরণে সবসময় অনুপ্রেরণা যোগাবে।রাষ্ট্রপতি বলেন, আমাদের প্রত্যেকের দায়িত্ব হবে জ্ঞান-গরিমায় সমৃদ্ধ হয়ে বঙ্গবন্ধুর অসম্পূর্ণ কাজকে সম্পূর্ণ করে বাংলাদেশকে একটি সুখী ও সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করা। তাহলেই চিরঞ্জীব এই মহান নেতার প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করা হবে
ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট