দীর্ঘ আট বছর,, প্রবাসে কাটিয়ে যখন কাউ কে না জানিয়ে বাড়িতে আসি সারপ্রাইজ দিবো বলে,, বাড়িতে এসে আমি সারপ্রাইজ হয়ে যাই কারণ আজকে আমরা ছোট ভাইয়ের বিয়ে অথচ আমাকে কেউ একবার বলেনি,, আমি বাড়িতে আসায় কেউ খুশি হতে পারেনি আমি ভালো বুঝতে পারছিলাম,, কারণ তাদের চেহারায় খুশির চেয়ে বিরক্ত ভাব টা বেশি ছিলো,, সবার সাথে কোশল বিনিময় করে ঘরে যাই,, তখন বাবা আমার পিছন পিছন পিছন আসে,,
— কিরে নিলয় হঠাৎ বাড়িতে চলে আসলি যে কোন সমস্যা হইছে
— না বাব সমস্যা হয় নাই,, তোমাদের দেখতে মন চাইলো তাই চলে আসলাম,,
— ওওও তা আবার কখন যাবি
— বাবার কথা শুনে কিছু টা অনেক টা অবাক হলাম,, এই মাএ বাড়ি আসলে,, আর এখন জিজ্ঞেস করছে কখন যাবি,, একটা মুচকি দিয়ে বললাম,, কিছু পর চলে যাবো বাবা,,
— ওহ্ এখন না এসে কিছু দিন পর আসতি,, এখনো অনেক লেনাদেনা বাকি আছে আমাদের
— বাবার কথা শুনে কিছু বললাম না,, তখন মা বললো
— কিরে বাবা চলে আসলি কেন কোন সমস্যা হইছে
— না মা সমস্যা হয় নাই,, এমনি আসল তোমার দেখতে
— ওও আচ্ছা ফ্রেশ হয়ে আর,, আজকে আবার রাকিবের বিয়ে তুই যাবি নাহ্ তোর ভাইয়ের আসে
— নাহ্ মা আমি আমি ক্লান্ত,, তাই যাবো নাহ্
আমি আমার মা বাবার কথা শুনে অনেক টা অবাক হলাম,, বড় ছেলে বিয়ে করে নাই,, তাকে জিজ্ঞেস করে ছোট ভাইয়ের বিয়েতে যাবে কি নাহ্,, সবাই ছোট ভাইয়ের সাথে চলে গেছে,, শুধু মা ছাড়া,, সারা দিনের জার্নি করে অনেক টা ক্লান্ত,, তাই কিছু না খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ি ঘুম ভাঙ্গে মানুষের হইচই শুনে বুঝতে পারলাম বউ নিয়ে চলে আসছে এর মধ্যে ছোট ভাইয়ের সাথে কথা বা দেখা হয় নাই,, ওই ভাবে শুয়ে আছি আমাকে কেউ জিজ্ঞেস করেনি আমি কিছু খেয়েছি কিনা না একটু পর ছোট বোন আসলো
— ভাইয়া কেমন আছো তুমি
— ভালো,, তুই কেমন আচ্চিস
— ভালো,, ভাইয়া তুমি মনে হয় সকাল থেকে কিছু খাওনি
— আরে তেমন কিছু না,, খাওয়া হইছে আমার
— ভাইয়া তুমি মিথ্যা টা ও ভালো ভাবে বলতে পারো নাহ্,, তুমি বসো আমি খাবার নিয়ে আসি
মানুষ বলে মা নাকি সন্তানের দুঃখ বোঝে কিন্তু আমার বেলা উল্টো আমার আম্মু মনে নাই আমি বাড়িতে আসছি,, এতো খন যার সাথে কথা বললাম,, সে হলো আমার ছোট বোন,, এক মাএ আমার বোন আমার চেহারা দেখে বলতে পারে আমি কি চাই,, তাই তো বুঝতে পারছে আমি কিছু খাই নাই,, কিছু খন পর খাবার নিয়ে আসলো
— ভাইয়া খাবার টা খেয়ে নাও
— হুম
— ভাইয়া একটা কথা বলি,,
— হুম বল কি বলবি
— আমার হাতে খাইয়ে দিবো তোমাকে
— হুম দে অনেক দিন হলো কারো হাতে খাবার খাই না
তার পর ছোট বোন,, খাবার খাইয়ে চলে গেলো,, রাতের বেলা সবাই আমার ঘরে আসলো সাথে ছোট ভাই ও ছিলো,, আম্মু বললো
— নিলয় কি নিয়ে আসলি আসার সময়,, আমাদের একটু দেখা
— এনে ছিলাম অনেক কিছু,, কিন্তু কা কে দিবো বুঝতে পারছি না,, তখন বাবা বললো
— কা কে দিবি মানে আমার তোর পরিবার আমাদের কে দিবি
— একটা মুচকি হাসি দিয়ে বললাম তোমারা আমার পরিবার
— কেনো
— নাহ্ এমনি,, আমি এখন কিছু খুলতে পারবো নাহ্,, দুই দিন পড়ে খোলবো,,
তারপর সবাই চলে গেলো কি আজব দুনিয়া,, আমার থেকে তাদের কাছে জিনিসের দাম টা বেশি দেখতে দেখতে দুই দিন কেটে গেলো।এই দুই দিনে আমার পরিবারের কেউ আমার কোনো খুজ খবর রাখে নাই,, শুধু আমার ছোট বোন,, মোন্তাহা ছাড়া,, দুই দিন পর আব্বু আম্মু আমার রুমে আসে,, সাথে ছোট ভাই,, বড় আপু,, মোন্তাহা,, আব্বু বলে
আব্বু — নিলয় কি করিস
— কিছু না আব্বু বলেন
আব্বু — তা আসার সময় কি নিয়ে আসলি,, এখনো দেখলাম না যে
— বুঝতে পারলাম সাবাই এখন আমার রুমে কেনো আসছে,, আসলে আব্বু তোমার বিয়ে নিয়ে ব্যাস্ত তাই,, কিছু বের করি নাই
আব্বু — ওওও তাহলে এখন বের কর তর বড় আপু আছে, দেখি সবার জন্য কি নিয়ে আসলি,,
— আসলে আব্বু কারো জন্য কিছু নিয়ে আসি নাই,, শুধু মোন্তাহার জন্য কিছু জিনিস নিয়ে আসছি,,
দেখলাম,, ছোট ভাই,, বড় আপুর চেহারা,, মলিন হয়ে গেছে,, তখন আম্মু বললো,,
আম্মু— দেখি কি নিয়ে আসলি,, মোন্তাহার জন্য,,
তার পর,, আমার সব কিছু বের কি,, যা বের করেছি সেখানে,, শুধু মোন্তাহার,, জিনিস ছিলো,, তখন বড় আপু বললো
বড় আপু— শুধু এই জিনিস গুলো নিয়ে আসলি
— হুম কেনো
বড় আপু— আমি না বললাম কিছু দিন আগে,, তুই যখনি বাড়ি আসবি তোর দুলা ভাইয়ের জন্য একটা লেপটপ নিয়ে আসবি,,
— আসলে আপু হঠাৎ করে চলে আসছি তাই কিছু নিয়ে আসি নাই,,
বড় আপু— তোকে কে বলছে হঠাৎ করে চলে আসতে,, আরো দুই বছর পড়ে আসলে কি হতো,, সেই দিন তো গেলিদেশের বাহিরে,, এতো তারি চলে আসা লাগে,, হুম
— আপু আট বছর পড়ে আসলাম,,
বড় আপু— তো কি হইছে,, মানুষ তো দশ বছর পড়ে আসে বাড়িতে,, আর শুধু আট বছর আট বছর করিস,, এই আট বছরে কি করছিস আমাদের জন্য,,
আপুর কথা শুনে কিছু বললাম না,, আমি শুধু একটা মুচকি হাসি দিয়ে,,আব্বুর দিকে তাকালাম
ছোট ভাই — ভাইয়া আমার জন্য আই ফোন আনতে বলে ছিলাম নিয়ে আসছো
— নাহ্ বললাম তো হঠাৎ করে চলে আসছি,, তাই কিছু নিয়ে আসি নাই
— তা তো দেখতে পারতেছি,, ছোট বোনের জন্য জিনিস,, নতুন ফোন,, তারপর কসমেটিক,, আরো কতো কিছু,, আর আমাদের জন্য কিছু নিয়ে আসো নাই,,
— আরে সেই রকম কিছু না,, ওর জন্য আগে এই গুলো কিনে রেখে ছিলাম,,
ছোট ভাই — হুম বুঝতে পারছি,, আর বলতে হবে,, কিছু দিন পড়ে আসলে তো হতো এতো তারা তারি আসার কি দরকার ছিলো শুধু শুধু,, আর আপু তো ঠিক বলছে,, কি করছো তুমি আমাদের জন্য,,
পর্বঃ০২
ছোট ভাইয়ের কথায় ও কিছু বলি নাই,, শুধু ছোট ভাই আর আপুর দিকে তাকিয়ে ছিলাম,, কি বলবো যেখানে আমার মা বাবা আছে,, তাদের সামনে এতো কিছু বললো তারাই কিছু বলে নাই,, সেখানে আমি কি বলবো,, ভেবে ছিলাম আব্বু কিছু বলবে দেখলাম আব্বু আম্মু দুই জন চুপ,, তখন আম্মু বললো,,
আম্মু — নিলয় আম্মু জন্য কি নিয়ে আসলি,,
— নাহ্,, মা আমি কিছু নিয়ে আসি নাই,,
আম্মু— তোকে না বলে ছিলাম আসার সময় আম্মু জন্য এক জোড়া জিনিস নিয়ে আসবি,, তাও নিয়ে আসিস নাই,,
— না মা আমি কিছু নিয়ে আসি নাই,, আর তোমাকে তো আমি অনেক বার জিনিস দিয়েছিলাম,, সেই গুলো কই
আম্মু— সেই গুলো পৃরনো হয়ে গেছে,, তাই বলে ছিলাম,, জিনিস নিয়ে আসতে
— ওহ,,আচ্ছা আবার দেশের বাহিরে গিয়ে,, তোমার জন্য জিনিস পাঠিয়ে দিবো
আম্মু— হুম,, এখন বল তোর আব্বুর জন্য কি নিয়ে আসলি
— বললাম তো,, মা আমি কারো জন্য কিছু নিয়ে আসি নাই,, তাহলে বার বার জিজ্ঞেস করো কেনো,, তখন আব্বু বললো
আব্বু — বুঝলাম তুই কিছু নিয়ে আসিস নাই,, তাহলে টাকা পয়সা কই
— আমি টাকা পাবো কই,, মাসের সব টাকা তো বাড়িতে পাঠাই দিতাম,, তাহলে আমার কাছে টাকা আসবে কই থেকে,,
আব্বু — তাহলে আমি মানুষের লেনাদেনা দিবো কি করে,, আর তোর ছোট বোন মোন্তাহার বিয়ে দিবো কি ভাবে,,
— এতো বছরের,, টাকা পয়সা কই,,
আব্বু — সেই টাকা তো সংসারের করছ হয়ে গেছে,, এখনো অনেক দেনা বাকি,, তুই যত তারা তারি পারিস চলে যা,, আর তোর রিটার্ন টিকিট,, কবে
— আব্বার কথা শুনে,, আব্বুর কথা শুনে অনেক টা অবাক হলাম,, হুম আব্বু চলে যাবো,,
তারপর আব্বু চলে গেলো,, কি আজব দুনিয়া আমি কেমন আছি তা কেউ জিজ্ঞেস করে নাই,, সবাই শুধু টাকা আর জিনিস নিয়ে ব্যাস্ত,, কি আজব দুনিয়া,, আর দুনিয়ায় হিসেব,,তার পর ছোট বোন আমার কাছে আসে,,
মোন্তাহা — ভাইয়া কি দরকার ছিলো,, এই গুলো আনার
— আরে তুই আমার এক মাএ ছোট বোন,, তোর জন্য আনবো না তো কার জন্য আনবো শুনি
মোন্তাহা — ছোট ভাইয়া শুধু রাগ করলো,,
— আরে সব কিছু ঠিক হয়ে যাবে,, আর তো পনেরো দিন,,
মোন্তাহা — কেনো ভাইয়া পনেরো পর কি হবে,,
— কিছু না তুই যা
মোন্তাহা চলে গেলো,,দেখতে দেখতে কেটে গেলো পনেরো দিন,, সকাল বেলা,, ছোট বোন আমার রুমে আসে,, এসে দেখ
ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট