যশোর জেলার অভয়নগরে কয়লার ডিপোর নৈশ প্রহরী মিন্টু হত্যা মামলার রহস্য উন্মোচন সহ আসামী গ্রেফতার ও আলামত উদ্ধার করেছে পিবিআই যশোর।
মেহেরপুর জেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে গাংনি থানার কাজীপুর নিমস্মরন পাড়া এলাকা থেকে নড়াইল জেলার বিছালী ইউনিয়ন এর রুখালী গ্রামের মোহাম্মদ ইনাজ বিশ্বাসের ছেলে অভিযুক্ত মোঃ রায়হান বিশ্বাস (১৯), সাতক্ষীরা জেলার কাউনডাঙ্গা থানার মোঃ মফিজুল ইসলাম এর ছেলে অভিযুক্ত মোঃ আশিকুর রহমান(১৯) কে গ্রেফতার করে পুলিশ। পিবিআই যশোর জেলা ইউনিট ইনচার্জ পুলিশ সুপার রেশমা শারমিন জানান, যশোরের অভয়নগরের বেঙ্গল গেট এলাকার মৃত মুসা তরফদার এর ছেলে নিহত মিন্টু তরফদার (৫২) উপজেলার সরকার গ্রুপের গোল্ডেন ঘাটে নাইট গার্ড হিসেবে কর্মরত ছিলেন। গত ২০ শে আগস্ট তালতলা এলাকার সরকার গ্রুপের গোল্ডেন ঘাটের অফিস কক্ষের ভিতর থেকে মিন্টু তরফদারের মৃতদেহ মুখে রক্ত মাখা ও গলায় গামছা পেঁচানো অবস্থায় উদ্ধার হয়। উপরোক্ত ঘটনা সংক্রান্তে নিহত মিন্টু তরফদার এর স্ত্রী মোছাঃ জুলেখা বেগম (৪৮) বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামী করে যশোর অভয়নগর থানার মামলা নং-১৯, তারিখ-২১/০৮/২০২২ খ্রিঃ, ধারা-৩০২/৩৪ পেনাল কোড আইনে মামলা দায়ের করে মামলাটি পিবিআই এর সিডিউলভুক্ত মামলা হওয়ায় পিবিআই, যশোর জেলা স্ব-উদ্দ্যোগে মামলাটির তদন্তভার গ্রহণ করে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করে। তদন্তের ধারাবাহিকতায় মেহেরপুর জেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে গাংনি থানার কাজীপুর নিমস্মরন পাড়া এলাকা থেকে আসামিদেরকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। আসামীদ্বয়ের স্বীকারোক্তি মোতাবেক তিনি আরও জানান, মেহেরপুর জেলা গাংনি থানাধীন বামন্দি বাজারস্থ আতাউল সুপার মার্কেটের সালাম মোবাইল সার্ভিসিং সেন্টার এর মালিক আব্দুস সালাম এর দখল থেকে নিহত মিন্টু তরফদার এর ব্যবহৃত মোবাইল ফোন NOKIA 105 MODEL NO RM-1134 IMEI-358902078631707 সহ XIAOMI A2 মডেলের মোবাইল ফোন উদ্ধার করে পুলিশ প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পিবিআই জানতে পারে, গত ১৯ আগস্ট অভিযুক্ত মোঃ রায়হান বিশ্বাস(১৯) ও মোঃ আশিকুর রহমান (১৯) দ্বয় চাকুরীর পাওয়ার আশায় সরদার এন্টারপ্রাইজ নামক কয়লার ডিপোতে যায়, কিন্তু জাতীয় পরিচয় পত্র না থাকায় তাদের উক্ত প্রতিষ্ঠানে চাকরী হয় নাই। অভিযুক্তদ্বয় ফেরার পথে উক্ত প্রতিষ্ঠানের নৈশ প্রহরী মিন্টু তরফদারের হাতে ০২ (দুই) টি মোবাইল ফোন দেখতে পায়। একপর্যায়ে অভিযুক্ত মোঃ রায়হান বিশ্বাস(১৯) ও মোঃ আশিকুর রহমান (১৯) মিন্টু তরফদারের মোবাইল ফোন চুরি করবে বলে পরিকল্পনা করে পরিকল্পনানুযায়ী ঐদিনই অর্থ্যাৎ ১৯ আগস্ট সন্ধ্যা অনুমান ৭ টায় মিন্টু তরফদারকে হত্যা করে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন দুইটি চুরির উদ্দেশ্যে তার সাথে দেখা করে এবং ঐদিন রাতে তার সাথে অফিস কক্ষে থাকার প্রস্তাব দেয়। প্রথম দিকে মিন্টু তরফদার রাজি না হলেও একপর্যায়ে অভিযুক্তদ্বয়ের আকুতি মিনতি শুনে রাজি হয় এবং তাদের থাকতে দেয় অভিযুক্তদ্বয় মিন্টু তরফদার এর সাথে রাত আনুমানিক ৯ টার সময় অফিস কক্ষে বসে গল্প করে। গল্পের একপর্যায়ে পূর্বপরিকল্পনা মোতাবেক অভিযুক্তদ্বয় মিন্টু তরফদার এর গলায় গামছা পেঁচিয়ে গামছার দুই দিক থেকে দুইজনে টেনে ধরে মৃত্যু নিশ্চিত করে। মিন্টু তরফদার মৃত্যু নিশ্চিত হলে তারা মিন্টু তরফদারের মোবাইল ফোন দুইটি নিয়ে পালিয়ে যায় পিবিআই কে গ্রেফতারকৃতরা আরো জানায়, পরদিন ইং ২০ আগস্ট তারা মিন্টু মিয়ার একটি মোবাইল ফোন খুলনা সোনাডাঙ্গা নিউ মার্কেট এলাকার বাইতুন নুর জামে মসজিদ মার্কেটের ৮৬ নং দোকান স্মার্ট মোবাইল শপ এর কর্মচারী আব্দুল্লাহ সানাম খান(২৮) এর নিকট ২০০০/- টাকার বিনিময়ে বিক্রয় করে। ঐরাতে তারা আত্মগোপনের উদ্দেশ্যে মেহেরপুর জেলার গাংনী থানাধীন আসামী রায়হানের খালার বাড়ী কাজীপুর নিমস্মরন পাড়া যায়।অভিযুক্তদেরকে উক্ত ঠিকানা থেকে গ্রেফতারকালে তারা জানায়, ভিকটিমের ব্যবহৃত অন্য মোবাইল ফোনটি আতাউল সুপার মার্কেটে ২২০/- টাকায় বিক্রয় করেছে ।আসামীদ্বয়ের স্বীকারোক্তি মোতাবেক মৃত মিন্টু তরফদার এর অপর মোবাইল ফোন NOKIA 105 MODEL NO RM-1134 IMEI-358902078631707 মেহেরপুর জেলা গাংনি থানাধীন বামন্দি বাজারস্থ আতাউল সুপার মার্কেটের সালাম মোবাইল সার্ভিসিং সেন্টার এর মালিক আব্দুস সালাম এর দখল থেকে উদ্ধার করা হয়। অভিযুক্ত মোঃ রায়হান বিশ্বাস (১৯) ও মোঃ আশিকুর রহমান (১৯) কে ২২ আগস্ট পলাশ কুমার দালাল, বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, যশোর আদালতে সোপর্দ করা হলে অভিযুক্তদ্বয় ফৌঃ কাঃ বিঃ ১৬৪ ধারা মোতাবেক স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি প্রদান করে। তদন্ত অব্যাহত রয়েছে বলে জানায় পিবিআই যশোর।
ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট