প্রতিবন্ধী ছেলে সহ ভাঙা ঘরে দুর্বিষহ দিন কাটাচ্ছে দিনমজুর। চাষের কোন জমি নেই, নির্দিষ্ট বেতনের কোন চাকুরি নেই। প্রতিদিন নেই কোন কাজ। সংসারের হাল ধরবে এমন কেউও নেই। বোর-আমন মৌসুমে পরের জমিতে কাজ করে যা আয় করেন তা দিয়েই সংসার চালাতে হয়। প্রতিবন্ধী এক ছেলেসহ ৪ সন্তান ও স্ত্রী বিউটি আক্তার (৩৪) ৬ সদস্যের পরিবার নিয়ে চরম কষ্টে দিনযাপন করছেন নেত্রকোনা জেলার পূর্বধলা উপজেলার জারিয়া ইউনিয়নের বাড়হা উত্তরা পাড়া গ্রামের আবদাল খাঁ (৫১)২৬ শে আগস্ট (শুক্রবার) সরেজমিনে পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, আবদাল খাঁর প্রতিবন্ধী ছেলে নাঈম (১৪)। সে শারিরিক ও মানসিক রোগে আক্রান্ত। তার চিকিৎসার জন্য টাকার প্রয়োজন। তাও জোগার করা আবদাল খার পক্ষে সম্ভব হয়না। ছেলের চিকিৎসার জন্য প্রতিবেশি ও আত্মীয়স্বজনের কাছ থেকে ধার-দেনা করেছেন অনেক। আগের টাকাই পরিশোধ করতে ব্যর্থ হওয়ায় নতুন করেও টাকা জোগাড় করতে অপারগ । তাই বাধ্য হয়েই প্রতিবন্ধী নাঈমকে বেশীরভাগ সময় চিকিৎসাহীন অবস্থায় থাকতে হয়। অন্য সন্তানেরা জোনাইদ (৭), ফাহিম (৫) ও সৌরভ (৩) তারাও মৌলিক-মানবিক চাহিদা পূরণ না হওয়ার মধ্য দিয়েই বেড়ে উঠছে। আবদাল খাঁর বসত ঘরটি ভাঙাচোরা, কোন রকমে বাঁশ কাঠ দিয়ে দাঁড় করিয়ে রেখেছেন। দেখে মনে হয় বাতাস আসলেই ঘরটি ভেঙে পড়বে। বৃষ্টির সময় ঘরের ভেতর পানি পড়ে। আসবাবপত্র পুরনো, ভাঙা ও ময়লাযুক্ত।
আবদাল খার সাথে কথা বললে তিনি জানান, আমি পৈত্রিক সূত্রে মাত্র এক শতাংশ জমি পেয়েছি। একটি ঘর তৈরি করে সন্তানদের নিয়ে কোনরকমে বসবাস করছি। নিজের জমি না থাকায় অন্যের জমিতে কাজ করে যা আয় হয় তা দিয়ে সংসার চালাতে হয়। বছরের অনেক দিনে কোন কাজ থাকে না তখন খেয়ে না খেয়ে দিন পার করতে হয়। বড় ছেলে নাঈম প্রতিবন্ধী তার চিকিৎসার জন্য টাকার প্রয়োজন হয়। প্রতিবন্ধী ভাতার যে টাকাটা আসে তা দিয়ে নাঈমের চিকিৎসা খরচ চলে না। যখন হাতে টাকা থাকে না তখন তার চিকিৎসাও করানো সম্ভব হয় না। ছোট ছেলেরা বড় হচ্ছে, তাদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করেও তিনি কোন কূল কিনারা পান না! তার দাবি সরকারের আবাসন প্রকল্পের আওতায় এনে তাকে একটি ঘরের ব্যবস্থা করে দেয়া হোক। তিনি অভিযোগ করে আরও বলেন অনেক স্বচ্ছল পরিবারও সরকারি ঘর বরাদ্ধ পেয়েছে তাহলে তিনি কেন বঞ্চিত হবেন?এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য মোঃ হাশিম সোনালী নিউজকে জানান, আবদাল খাঁ অত্যন্ত দতদরিদ্র একজন মানুষ। তিনি পেশায় দিনমজুর। আর্থিক অভাব-অনটনের কারণে তার জীবন যাপন কষ্টকর হয়ে উঠেছে। তার বিষয়ে আমাদের চেয়ারম্যান মহোদয় অবগত আছেন। আমরা চেষ্টা করতেছি শীঘ্রই উনার জন্য কিছু করার জন্য যাতে করে, উনি তার পরিবার নিয়ে ভালো একটি ঘরে জীবনযাপন করতে পারে।
ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট