(এস এম মনিরুজ্জামান আকাশঃ চাটমোহর পাবনা থেকে)
পাবনা জেলার চাটমোহর উপজেলার পার্শ্বডাঙ্গা ইউনিয়নের বড় গুয়াখড়া গ্রামে এক হৃদয় বিদারক ঘটনা ঘটেছে। ঘটনায় জানা যায় যে, রবিবার (পহেলা ডিসেম্বর ২০২৪) সন্ধ্যায় সাড়ে সাতটার দিকে গর্ভধারিণী মা আছিয়া বেগম(৮০) বার্ধক্যজনিত কারণে মারা যান। মায়ের মৃত্যুতে সবাইকে সান্ত্বনা দিতে পারলেও বড় ছেলে মুদি দোকানি শফিকুল ইসলাম (৬০) নিজে শোক সইতে না পেরে ৫ ঘণ্টা পর মারা যান। মৃত শফিকুল ইসলাম বড়ই ধর্ম পরায়ন ছিলেন।
গ্রাম ও এলাকাবাসীদের নিকট থেকে জানা যায় যে, রবিবার সন্ধ্যায় মা আছিয়া বেগম বার্ধক্যজনিত কারণে অসুস্থ অবস্থায় মারা যান চার মেয়ে ও দুই ছেলে রেখে, তার ছয় সন্তানের শফিকুল ইসলাম বড় সন্তান। সন্ধ্যায় মা মারা যাওয়ার পর বড় ছেলে মায়ের দাফন কাজ সম্পন্ন করতে কবর কাটা কাফনের কাপড় কেনা কেনা সহ যাবতীয় কাজের তদারকি করেছেন ও ছোট ভাই বোনদের শান্ত্বনা দেওয়া সহ বার বার মৃত মা জননীর মুখ খানি দেখতে বার বার মায়ের মৃতদেহের কাছে ছুটে যান।
প্রতিবেশী বাসিন্দা রিপন রহমান বলেন, আমাদের গ্রামের মৃত ফরমান আলীর স্ত্রী আছিয়া বেগম বার্ধক্যজনিত
কারণে অসুস্থ হয়ে শয্যাশায়ী ছিলেন তিনি সাড়ে সাত টার দিকে নিজ বাড়িতে ইন্তেকাল করেন তিনি। ছোট ভাই-বোনদেরসহ সকলকে মায়ের জন্য দোয়া করতে বলেন। পরদিন সোমবার (২ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় তার মায়ের জানাজা নামাজের সময় নির্ধারণ করা হয়।
রোববার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে হঠাৎ করেই বুকে ব্যথা উঠলে অসুস্থ হয়ে পড়েন ছেলে শফিকুল ইসলাম। স্বজনরা তাকে দ্রুত চাটমোহর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে রাত একটার দিকে মৃত ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী ও দুই ছেলে রেখে গেছেন।
শফিকুল ইসলাম শফির ছেলে ওমর ফারুক জানান, আমার দাদীর মৃত্যুর শোক সইতে না পেরে মধ্যরাতে স্ট্রোক করেন আব্বা। হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার জানান মারা গেছে।
দাদি মারা যাবার ৫ ঘণ্টা পর আমার আব্বা মারা গেছে।
সোমবার সকাল ১১টায় বড় গুয়াখড়া সম্মিলিত ইদগাহ মাঠে মৃত মা ও ছেলের জানাজা নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। পরে একই কবরস্থানে তাদের দাফনসোমবার সকাল ১১টায় বড় গুয়াখড়া সম্মিলিত ইদগাহ মাঠে মৃত মা ও ছেলের জানাজা নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। পরে একই কবরস্থানে তাদের দাফন করা হয়। মা-ছেলের এমন মৃত্যুতে স্বজন ও এলাকাবাসীর মাঝে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
এদিকে, স্বামীর মৃত্যুর পর সোমবার বিকেল ৪টার দিকে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন শফিকুল ইসলামের স্ত্রী ফিরোজা খাতুন। তাকে প্রথমে চাটমোহর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে তাকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয় এখন তিনি রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। শফিকুল ইসলাম ও আছিয়া বেগমের মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। আত্মীয় স্বজনেরা ও এলাকাবাসীরা সকলের কাছে দোওয়া চেয়েছেন।
ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট