দিনাজপুর(খানসামা) প্রতিনিধিঃ রিশাদ হোসেন
একজন মানুষের নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্য,বস্ত্র,বাসস্থান,চিকিৎসা মৌলিক অধিকারের অন্তর্ভুক্ত হলেও কোনো কিছুতেই মিল নেই, দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার ১নং নশরতপুর ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের বাঙ্গালপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মোছাঃ হামিদা বেগমে’র (৭৫) ৩ সদস্যের পরিবারের।নিজেই চলাচল করেন ছেলের সহযোগিতায়, বসে থাকেন ছেলের কাঁধ নির্ভর করে। শারীরিক প্রতিবন্ধী ছেলে হামিদুর রহমান (৪৫) ও তার মা মোছাঃঝলো বেগম (১০২)বয়সের ভারে সজ্জাশাহিত।পরিবারের তিন বেলা খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা করেন প্রতিবেশী থেকে গ্রামবাসী। বর্ষাকালের টিনের ফুটো দিয়ে পড়া বৃষ্টি,যেন হয়ে দাঁড়ায় তাদের দুঃখের সঙ্গী। সুস্থতা ও অসুস্থ সহ রয়েছে জীবন যাপনের নানাবিধ সমস্যা।
কনকনে শীতে যখন নাকাল উত্তরবঙ্গের জনজীবন।তখন ছবিতে দেখা, বসে থাকা হলুদ রঙের সোয়েটার পড়া বৃদ্ধ মহিলা হামিদা বেগম তার সাথে বসে থাকা তার ছেলে ও শুয়ে থাকা বৃদ্ধ মহিলাটি হামিদা বেগমের শতবর্ষী বয়সীর মা টিনের ঘরে বিছানাবিনহীন মেঝেতে তারা ঠান্ডা কে আপন করে খড়, বস্তা বিছিয়েই করছিলেন রাত্রি নিবরণ ।
ইছামতি ডিগ্রি কলেজের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের তৈরি অনলাইন গ্রুপ ‘ডিগ্রীয়ান বার্তা`।গ্রুপটি তৈরি হওয়ার পর থেকেই শিক্ষার্থীদের যৌথ উদ্যোগে বৃক্ষরোপণ,মাসিক বাজার খরচ সহ শীতার্তদের কম্বল বিতরণ সহ নানান মানবিক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসতেছে। গ্রুপের পক্ষ থেকে কম্বল বিতরণ কার্যক্রম চলাকালীন মা,ছেলে এবং নিজে বিছানাবিহীন দুর্বিষহ জীবন যাপন করা মোছাঃ হামিদা বেগমের অশ্রু ঝড়া রাত্রি নিবরণের কথা উঠে আসে ‘ডিগ্রীয়ান বার্তা গ্রুপের কাছে । ডিগ্রীয়ান বার্তা গ্রুপের এডমিন,মোহাম্মদ আল -আমিন আনসারী তা যাচাই-বাছাই করে তুলে ধরেন অত্র গ্রুপের এডমিন,মডারেটর ও সদস্যদের কাছে।
দরিদ্র পরিবারকে সাহায্য সহযোগিতা জন্য গ্রুপের সকলের কাছে ও রানীরবন্দর বাজারের সকল ছোট বড় ব্যবসায়ী থেকে পথচারীগণ আর্থিক ভাবে সাহায্য করেন। সংগ্রহকৃত অর্থ দিয়ে একটি খাট,একটি তোষপ,একটি চেয়ার ও দুইটি কম্বল নিয়ে গতকাল সোমবার, ৩০ডিসেম্বর রাত ৮ টায় মোছাঃ হামিদা বেগমের পরিবারের কাছে হাজির হন এক ঝাঁক মানবিক শিক্ষার্থীর দল। এমন উপহারের কথা শুনার পর খুশিতে আত্মহারা মোছাঃ হামিদা বেগমের ছেলে মোঃ হামিদুল রহমান। বাড়ি থেকে বাইরে এসে সবকিছু দেখার পর চিৎকার করে বলেন, “মা ও মা সত্যি সত্যি হামার জন্য খাট আইনছে”।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন অত্র গ্রুপে:রানা,সামিউল,আব্দুর রশিদ,আল-আমিন আনসারী,মাসুদ, সানজিদ, মুন্না সহ এডমিন,মডারেটর ও সদস্যবৃন্দ ।
সকলের উপস্থিতিতে খাট,চেয়ার, তোষপ সহ নগদ কিছু অর্থ মোছাঃ হামিদা বেগমের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
এমন মানবিক কার্যক্রম সুষ্ঠ ভাবে সম্পন্ন শেষে,উপস্থিত ও অনুপস্থিত সহযোগী সকলের প্রতি কৃজ্ঞতা প্রকাশ ও গ্রুপের আগামীর কোনো কার্যক্রম এবং গ্রুপের সাথে যুক্ত সকলের সামনে উপস্থিত সংক্ষিপ্ত বক্তব্য তুলে ধরেন অত্র গ্রুপের: আব্দুর রশিদ,সামিউল ইসলাম,রানা ও আল-আমিন আনসারী।
এরকম অসহায় পরিবারের পাশে দাঁড়ানো দেখে খুশি অত্র এলাকার সাধারণ মানুষজন।
ডিগ্রীয়ান বার্তা গ্রুপের শিক্ষার্থীদের এরকম মানবিক কার্যক্রম থেকে শুরু করে সামনের দিনের কি চিন্তা-ভাবনা কেমন হবে? এই প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হয়,গ্রুপের অন্যতম একজন এডমিন, মোহাম্মদ আল-আমিন আনসারী কে তিনি আমাদেরকে বলেনঃ আমাদের গ্রুপটি একদম অরাজনৈতি।এখানে সকল শিক্ষার্থীদের নিয়ে আমরা মানব সেবার মতো মহতী কর্মকাণ্ড সফল করি,করোনা ভাইরাসের পরবর্তী সময়ে ইছামতি ডিগ্রী কলেজের শিক্ষা সংক্রান্ত তথ্য জানার জন্য তেমন কোন ফেসবুক প্লাটফর্ম সকল ছিলো না।কলেজ তথ্যের জন্য পড়তে হতো বিড়ম্বনায়, বিশেষ করে যারা জীবিকার তাগিদে বাইরে অবস্থান করেন।এসব বিষয় বিবেচনা করে আমার সহপাঠী বন্ধুদের উদ্যোগে পথ চলা শুরু চালু হয় ডিগ্রীয়ান বার্তা ইছামতি কলেজ ফেসবুক প্ল্যাটফর্মের। ডিগ্রীয়ান বার্তার মাধ্যমে বেশ কয়েকটি কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে,এর মধ্যে রয়েছে ফ্রী রক্ত দান, শীতার্তদের শীতস্ত্র বিতরণ,বৃক্ষরোপণ,মাসিক বাজার খরচ,দরিদ্র শিক্ষর্থীদের ফ্রী বই উপহার এবং-ভ্রমন ও পিকনিক সহ সমাজসেবামূলক বিভিন্ন সেবা প্রদান করে হচ্ছে এবং আগামীতেও চলমান থাকবে ডিগ্রীয়ান বার্তা গ্রুপ পরিবার।আমরা সকলের দোয়া ও একান্ত সহযোগিতার মাধ্যমে সমাজ সেবা মূলক কার্যক্রম গুলো পরিচালনা করবো,ইনশা আল্লাহ।
ডিগ্রীয়ান বার্তা ইছামতি কলেজ,
আর্তমানবতার সেবায় নিয়জিত এক ঝাঁক শিক্ষার্থী।
ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট