রিশাদ হোসেন,দিনাজপুর,খানসামা প্রতিনিধিঃ
ধর্ষণ নামক এক ঘৃণ্য সামাজিক ব্যাধি মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়েছে চারিদিকে। ধর্ষণের শিকার হয়ে সামাজিকভাবে লাঞ্ছিত-বঞ্চিত হয়ে অসংখ্য নারী বেছে নিচ্ছেন আত্মহননের পথ। নারীদের উপর যারা এ ধরণের পাশবিক আচরণ করছে তারা মানুষ নামের অমানুষ। এদের মনুষ্যত্ব নেই, আছে পশুত্ব। আর এই পশুরা আমাদের মা, বোন, স্ত্রী, কন্যাদের সম্ভ্রমহানি করছে যেখানে সেখানে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, অজপাড়া গাঁয়ের কোন গৃহবধু, এমনকি শিশুরাও এই পশুদের হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছে না। অপ্রতিরোধ্য গতিতে বেড়ে চলছে এদের ধর্ষণ সন্ত্রাস। আসুন সবাই মিলে এই ধর্ষকদের প্রতিরোধ করি। তুলে দেই আইনের হাতে। আর এদের ব্যাপারে দাবী একটাই, বিচারে দীর্ঘসূত্রীতার জটিল জট ভেঙ্গে দ্রততম সময়ের মধ্যে সর্বোচ্চ শাস্তির নিশ্চয়তা।
ধর্ষকদের রক্ষা নাই, সর্বোচ্চ শাস্তি চাই।
সোচ্চার হয়ে বলি সবাই, বন্ধ হোক ধর্ষণ
নারী মাতা, নারী বধু, কন্যা এবং বোন।২০২০ সালে নিজ ফেসবুক টাইমলাইনে ধর্ষন প্রতিরোধ করতে পোস্ট করেন – হানিফ সংকেত,পরিচালক ইত্যাদি অনুষ্ঠান।
বলছিলাম ধর্ষনের কথা,ধর্ষনের শিকার হয়ে অনেক নারী সাহস নিয়ে করেছেন প্রতিবাদ আবার কেউ বেছে নিয়েছে আত্মহত্যার পথ। কিন্তূ ধর্ষক কখন ও প্রশাসনের চোঁখে ধুলো দিয়ে আবার কখন ও কখনও প্রশাসনের দুর্বলতায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে নয়তো লোকচক্ষুর আড়ালে থাকছে আত্মগোপনে।
দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার নশরতপুর ইউনিয়নের বসির মেম্বার পাড়ার বসবাসকারী মাফুজা আক্তার নামে এক অসহায় তরুণী ধর্ষনের শিকার হন। ধর্ষককে আইনের আওতায় এনে শাস্তির জন্য শরণাপন্ন হন পুলিশ প্রশাসনের কাছে। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল শনিবার(১৮ জানুয়ারি ) দুপুর দুইটায় ভুক্তভোগী মুসলিম নারী ও এলাকাবাসীর আয়োজনে উপজেলার নশরতপুর ইউনিয়নের রানীর বন্দরের রংপুর-দিনাজপুর মহাসড়কে মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
দিনাজপুর জেলার চিরিরবন্দর উপজেলার ১নং নশরতপুর ইউনিয়নের বসির মেম্বার পাড়ার মাফুজা আক্তার (১৫) নামের মুসলিম মেয়েকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন অত্র এলাকার বাসিন্দা হিন্দু ধর্মের পিতা মৃত নির্মল পালের ছেলে উপেন পাল(কালু)৩৫।
অসহায় মেয়ে তরুণী মাফুজা আক্তার, ধর্ষণ ও নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে তার মা বাদী হয়ে গত বছর ২০২৪ সালের ১৪ ডিসেম্বর চিরিরবন্দর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করেন।মামলা করার পর রাতের আধারে অসহায় তরুণীর বাড়ি ঘরে পেট্রোল দিয়ে আগুন লাগিয়ে দিয়ে নানা ধরনের ভয়ভীতি দেখান আসামি উপেন পাল(কালু)। নির্যাতনের শিকার হওয়ার পর ২০২৪ সালটা পেরিয়ে নতুন বছর ২০২৫ এর আগমন হলেও ধর্ষন ও নির্যাতনের ভুক্তভুগী মাফুজা আক্তারের ন্যায্য বিচারের আশা আজও অনিশ্চয়তার খামে ভর্তি,সময় গেলেও ভাগ্য বদলায়নি তাই।ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করার মত কঠিন সমীকরণের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে, চিরিরবন্দর থানা পুলিশ।কোথায় গেলো আসামি,কবে হবে ধর্ষনের বিচার সহ নানান প্রশ্ন জাগছে জনমনে । এখন মামলার এক মাস পেরিয়ে গেলেও পুলিশের ধরা ছোঁয়ার বাইরে আসামি। সোস্যাল মিডিয়ায় ধর্ষণকারীর বিচার দাবিতে বাড়ছে প্রতিবাদের ঝড়। গত ১৫ জানুয়ারি মানববন্ধন কর্মসূচি দিলে তা পরবর্তীতে প্রশাসনের অনুরোধে তা প্রত্যাহার করে নেন মানববন্ধনকারী।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত কাল শনিবার আবার ও ছোট শিশু থেকে বড় কিংবা বয়স্ক সকলের অংশগ্রহণে মানববন্ধনে হাতে হাতে নানান ধরনের নানান রকমের প্রতিবাদী ব্যানার ও ফেস্টুন হাতে সবাই ধর্ষকের বিচার চেয়ে স্লোগানের মধ্যে দিয়ে মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় এ সময় বক্তব্য রাখেন ইমামুল হাসান, মোঃ নুর ইসলাম, মোঃ মমিনুল ইসলাম, দ্বিজেন্দ্র নাথ সেন, মোঃ সাদেকুল ইসলাম, ক্বারী রায়হান আলী, শাহ ইয়াসিফ ভুঁইয়া প্রমূখ। এ সময় উপস্থিত সকল মানবন্ধকারীদের উদ্দেশে ধর্ষক আসামিকে দ্রুত বিচারের আওতায় দাবি তুলে ধরেন এবং সবাইকে আইন প্রশাসনের সাহায্য নিয়ে ধর্ষক প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান করেন এবং আগামী ১৯, ২০ ও ২১ তারিখ পর্যন্ত তিন দিনের মধ্যে যদি পুলিশ প্রশাসন ধর্ষক উপেন পাল (কালু) কে ধরতে ব্যর্থ হয় তাহলে এইবার সবচেয়ে বড় আকারের মানববন্ধনের ডাক দিবেন বলে হুশিয়ারি দিয়ে সংবাদ সম্মেলন প্রত্যাহার করে নেন।
এ সময় আমরা মানববন্ধ কারীদের মধে একজন নুর আলম খান নিসুর সাথে কথা বলি তিনি আমাদেরকে বলেনঃ আমাদের এলাকায় ধর্ষনের মত একটা ঘটনা ঘটেছে।আমরা প্রশাসনের সাহায্য নিয়ে এটির সঠিক বিচার চাই।অসহায় একটি মেয়েকে জোরপূর্বক ধর্ষন ও বাড়ি ঘরে আগুন দেওয়া নিন্দনীয় কাজ এরকম একজন আসামির আমরা খুব দ্রুত বিচার চাই।এবং এলাকায় শান্তি চাই। আর কিছু কথা না বললেই নয়,আমাদের সমাজ পরিবর্তন করার জন্য জরুরি বার্তা গুলো বহন করে সকলের মাঝে ছড়িয়ে দিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন গণমাধ্যম কর্মী। কিন্তূ আমাদের মানববন্ধনে পুলিশ প্রশাসনের পাশাপাশি সংবাদকর্মীদের উপস্থিতি খুবই স্বল্প যা ঘটনার সত্যটা প্রকাশের নানা বাধার সম্মুখীন হচ্ছে।সামনের দিনে সকলের উপস্থিতি কামনা করি।ইহা ছাড়াও আমরা ভুক্তভুগী সহ কয়জনের সাথে কথা বলে জানতে পারি,ভুক্তভুগী ও তার পরিবার সহ গ্রামবাসী সকলেই বাড়ি ঘরে আগুন লাগানোর ঘটনাটি ঘটার পর থেকেই আতঙ্কিত অনেকেই রাতে ঘুমাতে পারে না ভয়ে।তাই দ্রুত ধর্ষক ব্যক্তিকে আইনের আওতায় এনে বিচার দাবি করেন এবং আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে চান ।
ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট