🥢এস এম মনিরুজ্জামান আকাশ
স্বাধীন বাংলা আজ হুমকি ধামকি ভীতিকর পরিবেশ পরিস্থিতিতে নিমজ্জিত। বোধ করি শত বিপদ সংকট পরিবেশের মধ্যেও আল্লাহ পাক রাব্বুল আলামীন কিছু মানুষেমানুষের দিন পার করছেন!
যেদিকে তাকাই শুধু ফ্যাকাশে মুখচ্ছবি লক্ষ্য করি। হয়তো আওয়ামীলীগের লোকজনের খেটে খাওয়া অতি সাধারন লোকজনের। মানুষ হিসেবে অসহায়ত্ব বোধ করি এবং হতাশা পোষণ করি। লালন করি বুকে প্রতিবাদী আবেগ স্বত্তাবোধকে!
মনে হয় আজকে দেশের নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি তৈরী না হলে হয়তো এমন দৃশ্য অবলোকিত হতো না।
সেই সাথে ঘৃনা ও প্রতিবাদ মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে নিঃরব প্রতিবাদী চিত্তে! দৃশ্যত মনে পড়ে স্বজনপ্রীতি কারী আওয়ামী লীগ নেতাদের এবং বিএনপির বাকপটু নেতা কর্মীদের। যুক্তি ও আদর্শের সংজ্ঞা তুলে অনেক লীডার-ক্যাডারদের সাথে স্নায়ু যুদ্ধ করে আসছি দীর্ঘ দিন ধরে। অনেক এলাকায় দেখেছি ভাগ বাটোয়ারার মহা উৎসব! দলীয় বলয় ছেড়ে অনেক নেতা-কর্মীরাই মেতে ছিলেন ভোগ বিলাসী রাজনীতিতে। সাধারণ জনগন নিরীহ নিরপরাধ প্রকৃতির লোকজন শান্তি প্রিয় হওয়ার প্রেক্ষিতে বিগত পনেরো বছর আওয়ামী লীগ সরকারের সাথে ইলেকশন নামক উৎসবে শরীক হতেন ও শরীক হয়ে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার মনো বাসনায় সদা তৎপর থেকেছেন।
তাদেরকেও আওয়ামী লীগ সরকার বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রকমের সুযোগ সুবিধা প্রদান করেছেন। হতদরিদ্র, ভিজিডি,রেশন কার্ড, গর্ভবতী ভাতা, বয়স্ক ও বিধবা ভাতাসহ বহু প্রকল্প গ্রহন করে পাশে দাড়িয়েছেন।
আওয়ামী লীগ সরকারের গুটি কয়েক মন্ত্রী এমপি বাদে অধিকাংশ জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে উচ্চারিত হওয়ার দুর্নীতির অভিযোগ অতীতের সকল অর্জন তথা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার শব্দ বাক্য সমুহকে দোষ যুক্ত করেছে।
আজকে আওয়ামীলীগের দুঃসময় এসেছে দুর্নীতি গ্রস্থ নেতা কর্মীদের সীমাহীন স্বজন প্রীতি, আত্মীয় করন, দলীয় করনসহ দলীয় বলয় থেকে আদর্শচ্যুত হওয়া ও সমন্বয়হীনতার কারনে। আজকের বাংলাদেশের ভেতরে বাহিরে অনেক চক্রান্ত ষড়যন্ত্রের রোষানলে পড়ে আওয়ামী লীগ কোন ঠাসা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। আওয়ামী লীগের ভাতৃপ্রতীম সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কে অন্তবর্তীকালীন সরকার নিষিদ্ধ করেছে। আওয়ামী লীগকেও নিষিদ্ধ করার দাবি জোড়ালো হওয়ার আগেই বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ নিজেদের স্বার্থেই আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ না করার দাবীতে আওয়ামী লীগের পক্ষে অবস্থান নেওয়ায় সরকার আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করতে পারেনি!
বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের অনেক নেতারই ভুল ছিলো, ভুল আছে তা সংশোধন করে পথ খুঁজে সঠিক পথে চলতে পারলে হয়তো আজকে এই কঠিন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে হতোনা। কারন! আওয়ামী লীগ তার ত্যাগী আদর্শিক যোগ্য নেতাকর্মীদের মুল্যায়ন করেনি! সেটা আমি জানি ও অনেক কাছ থেকে এবং অনেক আওয়ামী লীগ কর্মী বা সমর্থকের কাছ থেকে শুনেছি জেনেছি।
আমি একজন সাংবাদিক-কলামিস্ট-গবেষক হিসেবে নিবিড় ভাবে তা পর্যবেক্ষণ করেছি। আমি এখন গ্রাম গঞ্জে শহর-বন্দরে গভীর ভাবে অনুধাবণের চেষ্টা করি মানুষের মনের অবস্থা কি?
মানুষ কি ভাবছে ও কি চায়?
তাদের সাথে মিশে যেটুকু বুঝতে পেরেছি বা অনুধাবন করতে পেরেছি! সাধারণ শ্রেনীর মানুষ এখনোও তথাকথিত ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচারী হাসিনার উপর কনফিডেনসিয়াল!
তাদের দেশ নিয়ে মাথা ব্যথা করে না তাদের মাথা ব্যাথা করে পেটের ব্যাথায়-ক্ষুধার জ্বালায়।
গ্রাম গঞ্জে সরেজমিন অনুধাবন করলে যে বিষয়টি স্পষ্টতই পরিমাপ করা যাচ্ছে যে, সাধারণ আম জনতা হুমকি ধামকি ভীতি সন্তোস্ত্র পরিবেশ পরিস্থিতি পার করছেন। বেশির ভাগ এলাকা গুলোতে বিএনপি পন্থী নেতা-কর্মী, অতি উৎসাহী সমর্থকদের আত্মতুষ্টির প্রেক্ষিতে হুমকি ধামকি ভীতি প্রদর্শনের মত ঘটনা সচরাচর নিত্যকার চালচিত্র। চাঁদাবাজি তো গ্রুপিংয়ের মাধ্যমেই সংঘটিত হচ্ছে যদি তা অপ্রকাশ করার শর্তে ভিকটিম দায়বদ্ধ থাকছেন।
সাধারণ ভোটারদের প্রতি কথা বলতে চাই যে, শান্তি ও শৃঙ্খলা বজায় রাখার স্বার্থে আপনারা মনোবল অটুট রেখে পরিশ্রম করে যান। মনে প্রানে শফথ করুন যে,আমরা যাদের কে দুর্নীতি গ্রস্থ নেতা বা কর্মী হিসেবে জানি বা চিনি তাদের কে বয়কট করবো! তাদেরকে ভোট দিবোনা। শেখ হাসিনা দেশের মানুষ ও মানুষের কল্যানে হয়তো সাধারণ মানুষের ভাষ্য মতে অনেক কল্যাণমুখী কাজ করে গেছেন।হয়তো দুর্নীতির প্রপাগাণ্ডা যারা ঢাক-ঢোল পিটিয়ে প্রকাশ করে চলেছেন প্রতি নিয়ত, প্রতিমুহূর্তে তাদের নমুনা পাঁচ আগষ্টের পরে জাতি দেখতে পেয়েছেন। সাধারণ মানুষের মাঝে এ কথাও দোলাচলে প্রতিধ্বনিত হচ্ছে যে, দশ ট্রাক অস্ত্র, একুশে আগষ্ট গ্রেনেড হামলার মত মামলায় যদি কোন দৃশ্যমান ন্যায় বিচার না হয় তাহলে বাংলাদেশে কোন ন্যায় বিচারের আশা করা অনেকটায় হাওয়াই মিঠাই গালের ভেতর রাখার মত!
বাংলাদেশের সমকালীন প্রেক্ষাপটে বাস্তবতার আলোকে রাজনৈতিক পরিবেশ দোদুল্যমান ও অস্থির অবস্থা পার করছেন। মিথ্যাচার ও বাকপটু গাল গল্পে ভরপুর বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকারের শাসনামল। যেখানে দুর্নীতি বিরোধী সরকার ক্ষমতাসীন অথচ সেই সরকারের মদদপুষ্ট ভদ্রমহোদয়গন সকলেই ফুলে ফেঁপে সকলেই নাকি ব্যবসায়ী বা উপার্জন সফল উদ্যোক্তা বা পেশাজীবী।
যাই হোক বর্তমান সরকারের দীর্ঘ মেয়াদে দাগ কাটতে অচিরেই বিএনপি মাঠে নামবে বলে আমার ধারনা। আর বিএনপির একক আন্দোলন সংগ্রামে এই সরকারকে এক ইঞ্চিও দমাতে-নড়াতে পারবেনা বলে আমার ধারনা। ইতিমধ্যেই বিএনপির নেতা-কর্মীদের অনেক স্থানেই দোষ ত্রুটি বেড়িয়ে পড়েছে।
তবে সাধারণ পেশাজীবী,কর্মজীবী সকল দেশ প্রেমিক নাগরিকদের প্রতি উদাত্ত আহ্বান দুর্নীতি গ্রস্থ নেতা কর্মীদের বয়কট করতে হবে আওয়ামী লীগ বা বিএনপি বা যে দলেরই হোক না কেনো। আওয়ামী লীগ ফিরবে এবং বিএনপির পাশে সহাবস্থানে দাড়াবে উদ্বেগ সংশয় জড়তা ভীরুতা ঝেড়ে ফেলে উদ্বিগ্নতা মুছে ফেলতে হবে।
আর সর্বশেষ কথা হলো আঁধার কেটে ফুটবে আলো,
এ ধরা হবে আলোকময় সকলের প্রতি কল্যান কামনায়…
(তারিখঃ ছাব্বিশে জানুয়ারী ২০২৫)
লেখকঃ প্রভাষক এস এম মনিরুজ্জামান আকাশ
কবি-কলামিস্ট সাংবাদিক-গবেষক,পরিবেশ ও মানবাধিকার কর্মী, পাবনা।
ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট