মোঃ মকবুল হোসেন, বিশেষ প্রতিনিধি:
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ক্রমাগত অস্থিরতা, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের আন্দোলনসহ নানাবিধ সমস্যার কারণে দেশের শিক্ষা কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। সময়মতো পাঠ্যবই বিতরণ না হওয়ায় শিক্ষার্থীরা ইতোমধ্যেই প্রায় আড়াই মাস পিছিয়ে পড়েছে। বিশেষ করে বেসরকারি স্কুল-কলেজগুলোতে শিক্ষক সংকট পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। শিক্ষাবিদরা আশঙ্কা করছেন, চলতি শিক্ষাবর্ষে শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি স্পষ্ট হয়ে উঠতে পারে।
বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে অস্থিরতা আরও তীব্র। গত সাত মাসে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধকরণসহ বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলনের মাত্রা বেড়েছে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম প্রায় অচল হয়ে পড়েছে। বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটছে, যা ক্যাম্পাসগুলোতে নিরাপত্তা সংকট তৈরি করছে। খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) সম্প্রতি এমনই এক নজিরবিহীন অস্থিরতার সাক্ষী হয়েছে।
রাজধানীর সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে আন্দোলনও বড় ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছে। বর্তমানে ছোটখাটো দাবিতেও শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নামছেন, বিক্ষোভ করছেন, এমনকি ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ করে দিচ্ছেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, যেসব বিষয় আলোচনা ও আলোচনার মাধ্যমে সমাধান সম্ভব, সেসব নিয়েও অপ্রয়োজনীয় আন্দোলন হচ্ছে, যা পুরো শিক্ষা ব্যবস্থাকে হুমকির মুখে ঠেলে দিচ্ছে।
অন্যদিকে, শিক্ষকদের মধ্যেও চলছে চরম অসন্তোষ। বেতন-ভাতা ও অন্যান্য সুবিধার দাবিতে গত সাত মাসে শিক্ষকরা ক্লাসরুমের চেয়ে আন্দোলনের ময়দানেই বেশি সময় কাটিয়েছেন। রাজধানীতে প্রায় সব শিক্ষক সংগঠনই কোনো না কোনো দাবিতে আন্দোলন করেছে, যা শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার পরিবেশকে আরও নড়বড়ে করে তুলেছে।
শিক্ষাবিদদের মতে, শিক্ষা ব্যবস্থায় শৃঙ্খলা ফেরাতে এখনই কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে ভবিষ্যতে এর নেতিবাচক প্রভাব দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে সরকার, প্রশাসন, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সমন্বিত উদ্যোগ নেওয়া জরুরি। নইলে পুরো শিক্ষা ব্যবস্থা মুখ থুবড়ে পড়তে পারে।
ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট