মোঃ মকবুল হোসেন, বিশেষ প্রতিনিধি:
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) ভর্তি পরীক্ষায় মেধা তালিকায় স্থানসহ আরো ৪ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেলেও রিফা খাতুনের ভর্তির ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে দারিদ্র্য। অভাব অনটনের মধ্যেও লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়া রিফা এখনও আর্থিক সমস্যার কারণে ঢাবিতে ভর্তি হতে পারেনি।
মেধাবী শিক্ষার্থী রিফা খাতুন রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার কাফ্রিখাল ইউনিয়নের বুজরুক মহদীপুর গ্রামের মৃত বজলুর রশীদের মেয়ে। তিন বোনের মধ্যে রিফা সবার ছোট। তার বড় দুই বোনের বিয়ে হয়েছে।
রিফা ২০২৪-২০২৫ শিক্ষাবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘ক’ ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে মেধা তালিকায় ১০৩তম করে নিয়েছে। কিন্তু বর্তমানে অর্থাভাবে তার উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ নষ্ট হতে বসেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তির খরচ যোগাতে হিমশিম খাচ্ছে রিফার গৃহিণী মা লাভলী বেগম। তার মা হাঁস-মুরগি লালন পালন করে মেধাবী মেয়েকে কিছুটা সহযোগিতা করেছেন।
রিফা খাতুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও আরো ৪টি বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেয়েছেন। কিন্তু তাঁর স্বপ্ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জুড়ে, সেখানেই ভর্তি হতে চান। ছোটবেলা থেকেই রিফা শিক্ষা জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে মেধার পরিচয় দিয়ে এসেছে।
টিউশনি করে লেখাপড়ার খরচ চালিয়ে স্থানীয় বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হন রিফা। স্বপ্ন ছিল এইচএসসিতে বিজ্ঞান বিভাগে পড়ে চিকিৎসক হওয়ার। কিন্তু বিজ্ঞান বিভাগে পড়তে খরচ অনেক বিধায় ভর্তি হন রংপুর সরকারি কলেজের মানবিক বিভাগে। সেখানে শিক্ষকদের উৎসাহ ও সহযোগিতায় মানবিক বিভাগে জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হন।
রিফার ছোট থেকে স্বপ্ন বড় হয়ে বিসিএস ক্যাডার হয়ে পরিবারের হাল ধরবেন। তার ইচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে থেকে পাস করে বিসিএস দিয়ে প্রশাসন ক্যাডারে চাকরি করার। কিন্তু টাকার অভাবে তার স্বপ্ন আজ নিঃশেষ হতে বসেছে। কেউ একটু এগিয়ে আসলে পূরণ হবে তার স্বপ্ন। এ জন্য সমাজের সামর্থ্যবান মানুষের সহযোগিতার আশায় আছেন রিফা খাতুন ও তার পরিবার। অর্থের কোথাও থেকে জোগান না হলে একজন মেধাবীর স্বপ্ন শেষ হবে অকালেই।
রিফার মা লাভলী বেগম জানান, অনেক কষ্টে খেয়ে না খেয়ে মেয়েকে পড়াশোনার খরচ চালিয়েছি। কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি হতে অনেক টাকার প্রয়োজন। মেয়েটার জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে অর্থের অভাবে ভবিষ্যৎ নষ্ট হয়ে যাবে এ কথা ভাবতেই পারছি না। তারপরেও ঢাকায় থেকে পড়াশুনা করতে প্রতি মাসে অনেক টাকার প্রয়োজন। এখন কী করব ভেবে পাচ্ছি না। কোনো উপায়ও নেই যে, সেই উপায় থেকে মেয়েটার পড়ালেখার ব্যবস্থা করবো। বাধ্য হয়ে মেয়ের পড়ালেখার বিষয়ে সহযোগিতার জন্য মিঠাপুকুর উপজেলা প্রধান নির্বাহীর কাছে আবেদন করা হয়েছে। এখনও সেখান থেকে কোনো আশ্বাস পাইনি।
ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট