খবর পদ্মা সেতু ডেস্ক
ঘূর্ণিঝড় শক্তি উপকুলে আঘাত হানতে পারে-আবহাওয়া অধিদপ্তরে এই ঘোষণায় কয়রায় ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ নিয়ে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে উপকুলীয় এ জনপদের মানুষ। এযাবত ঘটে যাওয়া প্রতিটি ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে উপকূলের দুর্বল বেড়িবাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছে উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চল।
সম্প্রতি ঘূর্ণিঝড় শক্তির আঘাতের শংকায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে উপকূলীয় জনপদ কয়রা উপজেলার নদী ভাঙন এলাকায় বসবাসরত মানুষ। বিশেষ করে ঝূঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ নিয়ে মানুষের এই আতংক।
চারদিকে নদী ও সুন্দরবনবেষ্টিত বাংলাদেশের সর্ব দক্ষিণে কয়রা উপজেলা। প্রাকৃতিক দুর্যোগ আর ভাঙনের সাথে যুদ্ধ করে বেঁচে আছে এ জনপদের মানুষ। উপকূলের জনগোষ্ঠীর জন্য সবচেয়ে আতঙ্কের মাস মে। বিগত বছরগুলিতে ঘূর্ণিঝড় যে আঘাত এনেছে তার অধিকাংশই ঘটেছে মে মাসে। নতুন করে আবার উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় শক্তি।
প্রতিটি ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে উপকূলবাসী নিজেদের রক্ষা করতে পারলেও প্রতিবার তাদের বসতঘর, ফসলি জমি, গবাদি পশু, মাছের ঘের ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সিডর, আইলা, মহাসেন, বুলবুল, নার্গিস, রোমেল, ফণী, আম্ফান, ইয়াসের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের সাথে লড়াই করে টিকে থাকা এ জনপদের নতুন আতঙ্ক ঘূর্ণিঝড় শক্তি। উপকূলীয় এ জনপদের মানুষ প্রহর গুনছে কখন আঘাত হানবে ঘূর্ণিঝড় শক্তি।
দক্ষিন বেদকাশী ইউনিয়নের মাটিয়াভাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম জানান, আইলায় বাড়িঘর সব ভাঙনে বিলিন হয়ে গেছে। কোনো রকমে ঠিকে আছি। আবার নাকি ঘূর্ণিঝড় শক্তি আসবে। এবার ঘূর্ণিঝড় হলে পরিবার পরিজন নিয়ে সাইক্লোন সেন্টারে আশ্রয় নেব।
কয়রা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের আহ্বায়ক জিএম মাওলা বকস জানান, প্রবল এই ঘূর্ণিঝড়টি আঘাত হানলে উপকূলীয় এলাকার মানুষের ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। কয়রার শাকবাড়িয়া ও কপোতাক্ষ নদের তীরবর্তী বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে সেগুলি সংস্কার করা না হলে ভেঙ্গে এলাকা প্লাবিত হবে। এমন পরিস্থিতিতে ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ নিয়ে উৎকণ্ঠায় রয়েছেন উপকূলের মানুষ।
উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য সচিব ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মামুনার রশিদ জানান, ঘূর্ণিঝড় শক্তি মোকাবেলার জন্য সাইক্লোন শেল্টার, সুপেয় পানি ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। উপজেলা সদরে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সরকারি-বেসরকারি ভবনগুলো প্রস্তুত রাখার পাশাপাশি ১১৬টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রে ৩২ হাজার ৫শ’ মানুষ আশ্রয় নিতে পারবে।
পানিউন্নয়ন বোর্ড খুলনার নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুল আলম জানান, কয়েকটি প্যাকেজের মাধ্যমে কয়রায় বেড়িবাঁধের কাজ চলমান রয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধের তালিকা করা হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধের কাজ শুরু হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুলী বিশ্বাস জানান, ঘূর্ণিঝড় শক্তি মোকাবেলা করার জন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।
ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট