যশোর জেলার মণিরামপুর উপজেলার হাজিরহাট বাজার সর্বজনীন দুর্গাপূজা উদযাপনে বাধাগ্রস্থ করায় পুজা পরিচালনা কমিটির সাংবাদ সম্মেলন।
যশোর জেলার মণিরামপুর উপজেলার হাজিরহাট বাজার সর্বজনীন দুর্গাপূজা উদযাপনে বাধাগ্রস্থ করায় পুজা পরিচালনা কমিটির সাংবাদ সম্মেলন।সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন, রীতা রানী পাড়ে।সভাপতি, হাজিরহাট মন্দির ও সর্বজনীন দূর্গাপূজা পরিচালনা কমিটি এবং সভানেত্রী বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামীলীগ, মণিরামপুর উপজেলা শাখা, মণিরামপুর, যশোর।আমি রাষ্ট্রের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মানবতার মা, হিন্দু সম্প্রদায়ের একমাত্র আশ্রয়স্থল, জননেত্রী শেখ হাসিনা সহ সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করাইতে চাই যে, আমরা বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ উপজেলা, যশোর জেলার মণিরামপুর উপজেলার ৫ নং হরিদাসকাটি ইউনিয়নের অধিবাসী। যে ইউনিয়নে প্রায় লক্ষাধিক মানুষের বসবাস। তাহার মধ্যে প্রায় আশি হাজার হিন্দু জনগোষ্ঠীর বসবাস। অত্র ইউনিয়নে হিন্দু অধ্যুষিত খ্যাত হাজিরহাট বাজারে প্রতি বছর। জাকজমকপূর্ণভাবে বিরাট সর্বজনীন দূর্গাপূজা উদ্যাপিত হইয়া আসিতেছে। এমনকি ইতিপূর্বে উক্ত হাজিরহাট প্রাঙ্গণের দূর্গোৎসবকে যশোর জেলার মধ্যে শ্রেষ্ঠ প্রতিমা ও বিশাল জনগোষ্ঠীর উপস্থিতির উৎসব হিসাবে পুরষ্কৃত করা হইয়াছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় মণিরামপুরের থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য, প্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রতিমন্ত্রীর ইন্ধনে ও সহায়তায় তার ক্যাডার বাহিনী বার বার আমাদের পূজা পরিচালনায় বাধা সৃষ্টি করা হইতেছে। হাজির হাট সর্বজনীন দূর্গাপূজা অত্র এলাকার ছয়টি গ্রাম সমন্বয়ে একটি বৃহৎ উৎসব উদযাপিত হইয়া থাকে। গত ২৬/০৭/২২ তারিখে অত্র ছয়টি গ্রামের সহস্রাধিক মানুষের উপস্থিতিতে সর্বজনীন দূর্গা পূজা উদ্যাপন পরিচালনা কমিটি গঠন করার লক্ষ্যে এক সভার আয়োজন করা হইয়াছিল। উক্ত সভায় পূর্ববর্তী সভাপতি কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা পূর্বক নতুন সভাপতির সভাপতিত্বে, উপস্থিত জনগণের ৮০% এর সমর্থনে রীতা রানী পাড়ে সভাপতি, অমিও রায় সাধারণ সম্পাদক এবং অশান্ত মল্লিক কোষাধ্যক্ষ নির্বাচিত হইলে তাৎক্ষণিক বহিরাগত গ্রাম হইতে কিছু লোক, পূর্ববর্তী কমিটির হাতে গোনা কয়েকজন হিন্দু সম্প্রদায়ের লোক, পুলিশ ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উপস্থিত হইয়া, আমাদের উপর হামলা করিয়া কমিটি গঠনকে বাধা গ্রস্থ করেন। যাহার ছবি ফেসবুক সহ অনলাইনে প্রকাশিত হইয়াছে। আমরা এই বিষয়ে গত ৩০/০৭/২০১২ ইং তারিখে আপনাদের উপস্থিতিতে একটি সাংবাদিক সম্মেলনও করিয়াছি।হাজিরহাট সর্বজনীন দুর্গাপূজা একশত বছরের অধিক কাল যাবত প্রতি বছর ছয়টি গ্রামের জনগণের মতামতের ভিত্তিতে পরিচালনা কমিটি গঠন করিয়া পূজা উদ্যাপিত হইয়া আসিতেছে। ইতিপূর্বের কয়েক বছরের পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকবৃন্দ অত্র কমিটি গঠনের মিটিংএ উপস্থিত থাকিয়া বর্তমান কমিটিকে সমর্থন করিয়াছে। কিন্তু একটি বিশেষ মহল, যাহারা মাননীয় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্যের সমর্থক ও ক্যাডার হিসাবে পরিচিত। তাহারা প্রতিমন্ত্রীর সহায়তায় জেলা, উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দকে সংগে নিয়া আমরা যাহাতে পূজা পরিচালনা করিতে না পারি তাহার বিরুদ্ধে বিভিন্ন রকমের বাধা সৃষ্টির পায়তারা করিয়াছে। এবং এলাকায় প্রতিমন্ত্রীর ক্ষমতার অপব্যবহার করিয়া পূজা অনুষ্ঠিত হইতে দেবেনা মর্মে প্রচার প্রচারণা চালাইতেছিল। যাহার ফলশ্রুতিতে গত ১৭/০৯/২২ তারিখে বিকাল ৩ ঘটিকা হইতে শতাধিক পুলিশ এবং পূজা সংশ্লিষ্ঠ গ্রাম বহির্ভূত এলাকা হইতে প্রতিমন্ত্রীর মদনে, তাহারই ক্যাডার খ্যাত বিদ্রোহী প্রতীকে নির্বাচিত স্থানীয় চেয়ারম্যান আলমগীর কবির লিটনের নেতৃত্বে বিপুল সংখ্যক লোকজনের উপস্থিতি ছিল লক্ষ্যনীয়। পরবর্তিতে রাত ৮ ঘটিকার সময় পূজা উদযাপন কমিটি যশোর জেলা শাখার সভাপতির নেতৃত্বে মণিরামপুরের সহকারী ভূমি কমিশনার, ওসি তদন্ত মণিরামপুর উপস্থিত হন। তাহারা সকলেই এলাকার ৮০% (আশি পারসেন্ট) হিন্দু সম্প্রদায়ের মতামতকে উপেক্ষা করিয়া শুধুমাত্র মাননীয় প্রতিমন্ত্রী মহোদয়ের ইচ্ছা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ভূমিকা রাখেন। এবং রাত দশটায় সহকারী পুলিশ সুপার (যশোর সার্কেল) আরো কিছু প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও পুলিশ নিয়ে উপস্থিত হন। এবং এনাদের নেতৃত্বে আচমকায় পুলিশ লাঠিপেটা করিয়া পূজা কমিটির লোকজনকে বাহির করিয়া দেন। ০৫ নং হরিদাসকাটি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও ৩৫ নং হরিদাসকাটি ইউনিয়নের আওয়ামীলীগের সভাপতি বাবু বিপদ ভঞ্জন পাড়েকে জিম্মি করিয়া রাখিয়া মানষিক উচারিং পূর্বক তারই সহধর্মিনী রীতা রানী পাড়েকে ভয় ভীতি দেখাইয়া তাহার নিকট হইতে পূজা মন্দির ও পূজা পরিচালনায় ব্যবহৃত অফিস কক্ষের চাবি ছিনিয়ে নেয়। যাহার কারণে অত্র এলাকার মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ও প্রচন্ড রকমের ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।অত্র এলাকার শান্তি প্রিয় মানুষের। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিকট আবেদন এই যে, পূজা উদযাপনের লক্ষ্যে পূজা পরিচালনা কমিটি দীর্ঘ একমাস যাবৎ প্রতিমা নির্মাণ সম্পূর্ণ করিয়াছে। পূজা গৃহ সাজসজ্জা, গেট, প্যান্ডেল সহ যাবতীয় কার্যক্রম কোন রকম বাধা বিঘ্ন ছাড়াই প্রায় সম্পন্ন করিয়াছে। এ যাবত কাজ কোন ভাবে শান্তি, শৃঙ্খলা, বিঘ্ন বা অশান্তির সৃষ্টি হয় নাই এতদস্বত্ত্বেও পুলিশের উপস্থিতিতে উপরোক্ত কর্মকর্তাবৃন্দ কেন পূজা উদযাপনকে বাধাগ্রস্থ করিয়া, হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রায় লক্ষাধিক মানুষের মনে গভীর অনুশোচনা সৃষ্টি এবং ভাবমূর্তি নষ্ট করা হইলো তাহার সুষ্ঠ তদন্ত সহ বিচার প্রার্থণা করিতেছি। মাননীয় প্রতিমন্ত্রী মহোদয় একজন উচ্চবর্ণের হিন্দু ব্রাহ্মণ হওয়ায় অত্র এলাকার ৯৫% নিম্নবর্ণের হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের প্রতি হিংসা চরিতার্থ ও ঘৃন্য মানসিকতা বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যে এই জঘণ্য কর্মকান্ড পরিচালনা করিতেছে।অতএব, এই হেন ঘূর্ণিত কর্মকান্ডের বিচারসহ যাহাতে সুষ্ঠুভাবে সর্বজনীন দূর্গা পূজা পরিচালনা করিতে পারি, তাহার উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে, আপনাদের মাধ্যমে, গণতন্ত্রের মানস কন্যা, মানবতার মা, হিন্দুদের একমাত্র আশ্রয়স্থল, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিকট প্রার্থণা করিতেছি ।
ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট