মোঃ মকবুল হোসেন, বিশেষ প্রতিনিধি:
তিন দাবিতে অহিংস দুর্নীতি-বিরোধী মঞ্চের মানববন্ধন করে, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়, এসময় অন্তর্বর্তীকালীন ছাত্র জনতার সরকারের কাছে তিন দাবি জানান তারা।
তাদের দাবিগুলো হলো-
১। দুর্নীতির টাকা উদ্ধার করো, সুদমুক্ত বিনা জামানতে গণমুখী বিনিয়োগ করো অর্থনৈতিক বৈষম্য দূর করো।
২। দুর্নীতি-বিরোধী আইনে অহিংসের ১ কোটি ৮০ লক্ষ অনুস্বাক্ষরকারীদের স্বীকৃতি দাও, জুলাই অভ্যুত্থান গণ অভ্যুত্থানে রূপান্তর করো।
৩। অহিংসের শিশু নারী পুরুষ সংগঠকদের বিরুদ্ধে অন্যায় মামলা প্রত্যাহার, আহত নিহত ক্ষতিগ্রস্তদের রাষ্ট্রীয় সহযোগিতা নিশ্চিত করো।
মানববন্ধনে তারা জানান, বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি ২০২৪ সালে এক গবেষণায় ৫০ বছরে বাংলাদেশে থেকে পাচার হওয়া অর্থের পরিমাণ ১১ লাখ ৯২ হাজার কোটি টাকা বলে জানায়।
বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর অর্থনৈতিক শ্বেতপত্র কমিটি তাদের প্রতিবেদনে জানায়, শেখ হাসিনার শাসনামলের গত ১৫ বছরে বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর গড়ে প্রায় ১৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অবৈধভাবে পাচার হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক স্নোবাল ফিনান্সিয়াল ইস্ট্রিগ্রিটি (জিএফআই) বলছে, ২০১১ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যেই বাংলাদেশ থেকে ৬ হাজার কোটি বা ৯০ বিলিয়ন ডলার সমপরিমাণ অর্থ পাচার হয়েছে, পাচারকৃত অর্থ গন্তব্য দেশগুলোর তালিকায় আছে যুক্তরাষ্ট্র যুক্তরাজ্য, কানাডা, সুইজারল্যান্ড, দুবাই, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর এর নাম।
বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনতে অন্তর্বর্তী সরকার একটি টাস্কফোর্স গঠন করেছে, কাজ করছে দুদক, সি আই ডি, এন বি আর, বাংলাদেশ ব্যাংকের ফিনান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট।
সরকার দুর্নীতি বিরোধী একটি বিশেষ আইন নিয়েও কাজ করছে, ইতিমধ্যে সরকারের তথ্য সচিব মহোদয়ের বরাতে ১ লাখ কোটি টাকার উপর সম্পদ ও অর্থ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ডঃ আহসান এইচ মনসুর বলেন দরিদ্রদের ঋণ দেবার জন্য একটি বিশেষ ফান্ড গঠন করা হবে, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ডক্টর মোহাম্মদ ইউনুস সম্প্রতি লন্ডন সফরে বলেন অবৈধ অর্থ ফেরত দেয়া।
যেকোনো দেশের আইনগত ও নৈতিক বাধ্যবাধকতার মধ্যে পরে, এ সকল দৃষ্টিভঙ্গি ও উদ্যোগ নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়।
তবে আমরা মনে করি এ সকল উদ্যোগের জনভিত্তি তৈরি করা অহিংসের ১ কোটি ৮০ লক্ষ জনগণকে সম্পৃক্ত না করা গেলে এ উদ্যোগের সফলতা, স্থায়িত্ব ও ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠিত করা যাবে না।
গ্রামীণ দুর্নীতি বিরোধী এ বিশাল অনপদকে জুলাই অভ্যুত্থানের দুর্নীতিবিরোধী ইশতেহারে সম্পৃক্ত করা গেলে জুলাই অভ্যুত্থানকে প্রকৃত গণঅভ্যুত্থানে রূপান্তর করা সম্ভব হবে বলেও আমরা মনে করি।
উল্লেখ্য, অহিংস গণ অভ্যুযান বাংলাদেশ ২০২১ সাল থেকে এ পর্যন্ত গণসংযোগ চালিয়ে দেশের ৪০ জেলায় ১ কোটি ৮০ লাখ অনুস্বাক্ষর নিয়েছে, দেশব্যাপী হাজার হজার সংগঠক অজস্র উঠোন বৈঠক, ছোটো বড় সভা সমাবেশ করেছে। এসবের উদ্দেশ্য ছিল দুর্নীতির বিরুদ্ধে, দুর্নীতি যে করে তার বিরুদ্ধে তৃণমূল পর্যায় গণ সচেতনতা তৈরি করা, বিপুল অবৈধ সম্পদ ও পাচারকৃত অর্থ যে তারই ভ্যাট ট্যাক্সের টাকায় তা বুঝানো, এ সম্পদ উদ্ধারে সোচ্চার হওয়া ও উদ্ধারকৃত সম্পদে তাদের দাবিদার করে তোলা।
এ লক্ষ্যে অহিংস গণ অভ্যুত্থান বাংলাদেশ দুর্নীতি বিরোধী একটি বিশেষ আইন প্রস্তাব করে অবৈধ অর্থ উদ্ধার ও গণমুখী বিনিয়োগ জাতীয় সংস্থা যার মাধ্যমে অবৈধ অর্থ উদ্ধার করে একটি সরকারি জাতীয় সংস্থার মাধ্যমে দেশের দরিদ্র জনগণের মাঝে বিনা সুদে বিনা জামানতে সহজ শর্তে ঋণ দেয়ার একটি আইনি কাঠামো প্রস্তাব করা হয় দেশের বরেস্ত আইনজীবিদের মাধ্যমে।
ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট