(🥢এস এম মনিরুজ্জামান আকাশ)
অতিধর্ম পরায়নতায় ধর্মান্ধ এক লোকের কথা বলি!
এক বার এক লোক কোন এক বয়ান মাহফিল বা ইসলামী জালসায় গিয়ে নসীহত পাবার আশায় বসেছিলেন খানিকটা সময়।
তিনি তথায়, শায়েখদের বিভিন্ন নসীহা শ্রবনের পর বাড়ী ফিরতে ফিরতে সকল আমলের কথা ভুলে গেলেন শুধু মনে রাখলেন যে, মাথা পাগড়ী বাধা রাসুল (সাঃ) এর সুন্নাত বড়ই সাওয়াবের কাজ!
তিনি নামাজ পড়তেন মাঝে-মাঝে, কিন্তু পাগড়ি যথারীতি গুরুত্বপূর্ণ ভাবতেন।
হঠাৎ কোন একদিন তিনি কোথাও গেছেন কাজে বা বেড়াতে। সেদিন তার পাগড়ী নেই, কিন্তু তিনি তো নামাজ পড়তে পাগড়ী ব্যবহার করেন?
কি করা যায়? এখন কি করা যায়?
হঠাৎ তিনি তার পড়নে থাকা লুঙ্গি এক টানে খুলে পাগড়ী করে মাথায় বেঁধে নামাজে দাড়িয়েছেন!
হঠাৎ পিছনে থাকা লোক গুলো তাকে থামাতে উদ্যোত হয়ে তাকে বিরত করার চেষ্টা করছেন।
তখন তাকে মুসল্লী গন বলছেন আপনি এটা কি করছেন?
পাগড়ীওয়ালা বলছেন যে, কি করছি?
মুসল্লীরা বলছেন আপনি পাগড়ী!
তখন পাগড়ীওয়ালা বলছেন, ও আপনারা হয়তোবা জানেন না যে, পাগড়ী পড়া কত সাওয়াবের কাজ!
আমি এ জন্যই পাগড়ী পড়েছি…..
তখন সমবেত মুসল্লীরা নামাজ আদায় করবে নাকি!
ঐ
পাগড়ীওয়ালা চেতনাধারী কে বোঝাবে
যে,
লুঙ্গিপড়া হলো একাত্তর
আর পাগড়ী পড়া হলো চব্বিশ!
আমি স্বীকার অস্বীকারের প্রশ্নে বিবাদে জড়াবো না!
আপনারা নিঃসন্দেহে জ্ঞানী ও বিচক্ষণ মানুষ?
আজকাল ফেসবুকে কোন রকম কোন একটা পোস্ট করলে মতামত দানকারীদের পক্ষে বিপক্ষে বক্তব্য যুদ্ধ শুরু হয়ে যায়। অথচ সকলেই যার যার চেতনা উদ্দীপনা, আদর্শ-মতাদর্শের ছবি ফুটিয়ে তুলতে শুরু করে দেন!
যা সত্যি সত্যিই এক বাক স্বাধীনতার প্রতীক।
তবে স্বাধীন অর্জন করার চেয়ে রক্ষা করা নাকি কঠিন অধ্যায়ন করেছিলাম ছাত্রজীবনে!
বার বার যে দেশে স্বাধীনতা অর্জিত হয়, সে দেশের জন্ম হয় বার বার স্বাধীন হওয়ার জন্য।
চাইনা বাংলাদেশ বার-বার স্বাধীন হোক, পরাধীনতা, সাম্রাজ্যবাদী আমিরিকান লোলুপ দৃষ্টি, ভারতীয় আগ্রাসন, পাকিস্তানের মদদ, বেনিয়া বাবসায়িদের ব্যবসায়িক তীর্থ ভূমি না হোক প্রিয় মাতৃভূমি!
একটি স্বাধীন দেশের মধ্যে বিভিন্ন প্রতিকুল সমস্যা থেকে উত্তরনের জন্য অভ্যুত্থান সংগঠিত হয়। এ দেশে আগেও কয়েকটি অভ্যুত্থান সংঘঠিত হয়েছে।
আশা করি দেশের সাধারণ মানুষ কথিত ষড়যন্ত্রে হোক, ম্যাটিকুলাস ডিজাইনে হোক, আর না বুঝেই হোক, রাজপথে নেমেছিলো ক্ষোভের, অভিমানের, প্রতিবাদের জায়গা থেকে!
আজ অনেক সাধারণ মানুষ তাদের অভিমানের, ক্ষোভের, প্রতিবাদের জায়গা থেকে সরে এসে প্রকাশ্যে মুখ খুলতে শুরু করেছে যে, আগেই ভালো ছিলাম!
সমকালীন প্রেক্ষাপটে বাস্তবতা বলতে মানুষের যে স্বপ্ন রাজপথে মানুষকে একত্রিত করেছিলো?
সেই স্বপ্ন ছিটে ফোটাও আলোর মুখ দেখেনি। পরিনামে হাজার হাজার মায়ের বুক খালি হয়েছে। হাজারও গৃহবধূ স্বামী হারা হয়েছেন। পিতার আদর স্নেহ বঞ্চিত হয়েছে লক্ষ লক্ষ শিশুরা।
আবার অপরদিকে হাজার হাজার শিশুর মুখে হাসিও ফুটেছে এই অভ্যুত্থানের ফলে।
জুলাই আন্দোলন বা ছাত্র জনতার অভ্যুত্থান যেটাই বলি, অনায়াসেই এটাকে ম্যাটিকুলাস ডিজাইনে করা একটি সুদীর্ঘ দিনের পরিকল্পনার ফসল ছিলো সচেতন মহল এ কথা অস্বীকার করতে পারবেন না?
কারন,
বিষদে ব্যখ্যা করলে সকল কিছু বেড়িয়ে আসবে ও আসছে।
তবে হয়তো বিচার হবে, বিচারের নামে প্রহসন হচ্ছে। মামলা বাজির ব্যবসা থেকে শুরু করে বিগত আমলের সকল অনিয়মের সীমারেখাও কোন কোন ক্ষেত্রে অতিক্রান্ত হয়েছে।
ম্যাটিকুলাস ডিজাইনের কাছে হার মানা বিবেকের দংশন অনেক জনকেই দংশন করে।
সকল ক্ষতি পুষিয়ে গেলেও হতাহত প্রান, জীবন কি কেউ ফিরিয়ে দিতে পারবে। পঙ্গুত্ব বরণকারীদের সমাজ জীবনের কাছে বোঝা হয়ে থাকা দূর্বিষহ জীবন যাপন করা থেকে কে তাদের পরিত্রাণ দিবে।
সর্বোপরি যে, মানবিক বিপর্যয় মানবিক মূল্যবোধের অবক্ষয় রীতিমতো সমাজকে বিধ্বস্ত করেছে। এটা কোন দিনও আর আগের অবস্থানে ফিরবেনা।
কারন যে জাতি তার শিক্ষা গুরুর গলায় জুতোর মালা পড়াতে শিক্ষা দেয়, যে জাতি তার শিক্ষকের মুখে জুতো মারতে পারে, চড় থাপ্পড় মারতে পারে আর যায় হোক সেই জাতিকে যারা রাজপথ চিনিয়েছে একদিন হয়তো তাদেরকেও সেই পরিনতি উপহার দিবে!
এটা কখনো কাম্য নয় যে, জাতির মেরুদণ্ড নড়বড়ে হোক, থাক পরাধীনতার দিকে ঝুঁকে……
(পহেলা জুলাই ২০২৫ঈশায়ী)
✒️🎤এস এম মনিরুজ্জামান আকাশ
কবি-কলামিস্ট সাংবাদিক-গবেষক,
গীতিকার ও পরিবেশ মানবাধিকার কর্মী,
সভাপতি-
গ্রিনপিস বাংলা, পাবনা জেলা শাখা,পাবনা।
ইমেইলঃ kdaakash2024pabna@gmail.com
ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট