ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধিঃ মোঃ রাশেদ মিয়া
রংপুরের মিঠাপুকুরে রাস্তার বেহাল দশা দেখার যেন কেউ নেই, ভোগান্তিতে ৩ গ্রামের মানুষ
খানাখন্দে ভরপুর রাস্তার ছবি তোলার সময় মধ্যবয়সী এক চাচা এসে বললেন, ছবি তুলে নিয়ে যাচ্ছেন। এবার বুঝি আমাদের রাস্তাটা পাকা হবে। এমপি,চেয়ারম্যান-মেম্বার তারা তো ভোটের সময় ছাড়া আসেনা। বছর ঘুরে বছর আসে কিন্তু আমাদের রাস্তায় একটা ইটের টুকরাও পড়েনা।এভাবেই নিজের অপ্রাপ্তির কথা জানান, রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার ১ নং খোড়াগাছ ইউনিয়নের পাঁচঘরিয়া গ্রামরে বাসিন্দা শামসুজ্জামান। তার মতো উপজেলার ১৭টি ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষের এমন ভোগান্তির শিকার হওয়ার আক্ষেপ রয়েছে।
মিঠাপুকুর উপজেলায় বেশকিছু প্রধান প্রধান সড়কের সংস্কার কাজ করা হলেও গ্রামীন রাস্তাগুলোর বেহালদশা। ফলে সরকারের আধুনিক সুযোগ—সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে প্রত্যন্ত গ্রামঅঞ্চলের মানুষ।সরেজমিনে, খোড়াগাছ ইউনিয়নের এইচএন আশিকুর রহমান সড়কের সিংহদ্বার দিয়ে পদাগঞ্জ বাজার যাওয়ার পথিমধ্যে চকবাজার থেকে উত্তরদিকে একটি কাচা রাস্তা দেখা যায়। রাস্তাটি পাইকাপাড়া গ্রাম অতিক্রম করে নয়াপাড়া হয়ে, পাচঘরিয়া গ্রামের ভিতর দিয়ে রংপুর কোতোয়ালি থানার মিলবাজার সাথে সংযুক্ত হয়েছে। প্রায় ৪ কিলোমিটার এই রাস্তাটির বেহাল দশা। খানাখন্দে ভরপুর চলাচলের এই রাস্তাটি বর্ষাকালে মরণফাঁদে পরিণত হয়। একেতো লাল মাটি তার উপর কাঁচা রাস্তা হওয়ায় কোন যানবাহন চলাচল করতে পারেনা। রাস্তাটি পাকা করার জন্য এই তিন গ্রামের বাসিন্দারা যুগ যুগ ধরে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের নিকট দাবি জানিয়ে আসলেও কোন সুফল মেলেনি। উল্টো জনভোগান্তি আরও চরম আকার ধারণ করেছে। রাস্তাাটির দ্রুত সংস্কার কাজ করে চলাচলের উপযোগী করে গড়ে তোলার দাবি স্থানীয়দের।স্থানীয় গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল হাকিম বলেন, হাড়িভাঙ্গা আমের সময় আশিকুর রহমান এমপি স্যার এই রাস্তা দিয়ে হেটে একটা সভায় অংশগ্রহণ করেছিলেন। তখন এই রাস্তার বেহালদশা দেখে তিনি রাস্তাটি পাকা করার প্রতিশ্রতি দিলেও রাস্তাটিতে সংস্কারের ছেঁায়া লাগেনি। আমরাতো গ্রামের মানুষ কাজ—কাম করে খাই এমপি স্যারের কাছে যাওয়ার সুযোগ পাইনা। চেয়ারম্যানকে বলেও কোন লাভ হয়না।গৃহীনি মাহমুদা বেগম বলেন, রাস্তার খারাপ হওয়ার কারণে দুরদুরান্ত থেকে আমাদের গ্রামে কেউ আসতে চায় না। লোকজন সম্বন্ধ করতে এসে ফিরে যায়। ছেলে—মেয়েদের স্কুল কলেজে যাতায়াত করতে অনেক কষ্ট হয়। এমনকি রাস্তার কারণে বিয়ে ভেঙ্গে যাওয়ার মতো ঘটনা ঘটেছে।গ্রামের আরেক বাসিন্দা আনিছুল হক বলেন, রাস্তায় এখন বিভিন্ন জায়গায় খানাখব্দ দেখা যাচ্ছে। কিন্তু বৃষ্টি হলে হাঁটু কাঁদা হয়ে যায়। এখানকার কৃষকরা বর্ষা মৌসুমে তাদের কৃষিপণ্য বাজারজাত করতে পারেনা। একটি রাস্তার কারণে তিনটি গ্রামের মানুষ তাদের জীবনমান উন্নয়ন থেকে পিছিয়ে পড়ছে। কেউ অসুস্থ হলে বা কারও প্রসবের ব্যথা উঠলে যথা সময়ে ক্লিনিক বা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়াও সম্ভব হয় না।
এ বিষয়ে খোড়াগাছ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, গ্রামের রাস্তাগুলোর সংস্কার কাজ করা প্রয়োজন। কিন্তু সরকারি বরাদ্দ না পেলে আমরা কিভাবে রাস্তার কাজ করবো। ওই সেন্টারে আমি মাত্র ৭৫টি ভোট পেয়েছি তারা আমাকে ভোট না দিলেও ওই ওয়ার্ডের মেম্বারকে ১ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। মেম্বার টাকা পেলে উন্নয়নমূলক কাজ করবে। রাস্তা সংস্কার করার বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হবে।
ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট