হাফিজুর শেখ যশোর
যশোরের কেশবপুরে বাউশলা গ্রামে মৎসঘেরের পাশ দিয়ে সবজি চাষ করে সফল চাষি গোলাম শেখের ছেলে রিজাউল করিম।যশোরের কেশবপুরের বাউশলা গ্রামে মৎসঘেরের পাশ দিয়ে সবজি চাষ করে সফল চাষি গোলাম শেখের ছেলে রিজাউল করিম। মেধা মনন আর ইচ্ছা শক্তি একজন মানুষকে কাক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছে দেবার মূলমন্ত্র। এই দৃষ্টিভঙ্গে সততার সাহস নিয়ে স্বপ্নটাকে বাস্তবে রুপ দিয়েছে। মৎস্য ঘেরের চার পাশের সবজী চাষে রেজাউল করিম একজন সফল স্বাবলম্বী তরুণ। তিনি যশোরের কেশবপুরের বাউশলা গ্রামের গোলাম হোসেন শেখের ছেলে।সরেজমিন দেখা যায়, সবুজ পাড়ে চারপাশে বিভিন্ন প্রকার সবজীর সমারহ, থরে থরে ঝুলে আছে উন্নত জাতের তরমুজ, পেঁপেঁ, কাকরোল, সিম, বরবটি, কলা, পেয়ারা, লাউ, ঝিঙ্গে, কামড়ো শশা, চুইঝাল, ঝাল, বেগুনসহ বিভিন্ন ফসলের ভরে আছে। মৎস্য ঘেরের পাড় দিয়ে মাচা তৈরি করে ১২ মাসী তরমুজ সারি সারি ঝুলে আছে। এসমস্ত সবুজ ফসল দেখতে কোন মানুষকে আকৃষ্ট করছে। তেমনি ঘেরের পাড়ে সবজী চাষ করে বছরে প্রায় ৩/৪ লাখ টাকা আয় করছে। তার ক্ষেত দেখতে প্রতিদিন মানুষ ভিড় জমছে। অনেকে ঘের মালিকরা ও এলাকার অনেক যুবকেরা ঘের পাড়ে সবজী চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছে।রেজাউল করিম বলেন, দীর্ঘ ৩ বছর যাবৎ ৩ একর জমিতে একটি ঘেরে মৎস্য চাষ শুরু করি বিভিন্ন লোকের পরামর্শ নিয়ে। কিভাবে মৎস্য ঘেরের ভেড়িতে সবজী চাষ করা যায় দেখতে কৃষিবিদ কামরুজ্জামান একদিন আমার মাছের ঘেরে আসেন। তারপর আমাকে পরামর্শ দিলেন চারিপাশে সবজী লাগানোর। সেই অনুপ্রেরণায় আমি শুরু করি ভেড়িতে নানাবিধ সবজী চাষের।
তিনি বলেন, অন্য ব্যবসা ব্যক্তি কেন্দ্রিক বলে আমি একটি মৎস্য ঘের করি যেখানে নানা দেশীয় প্রজাতির মাছসহ যুব সমাজকে এই কাজে আগ্রহ বাড়ানোর জন্য আমি ঘেরের পাশাপাশি সবজী চাষ শুরু করি। এখানে প্রতি দিন পাঁচজন শ্রমিক কাজ করে।মৎস্য ঘের কর্মচারী মুজিবর সরদার বলেন, আমরা অনেক সময় কাজ না পেয়ে বেকার হয়ে পড়ি এলাকার একজন শিক্ষিত যুবক মৎস্য ঘেরের পাড়ে সবজী চাষ শুরু করায় আমরা সেখানে কাজ কাম করে জীবিকা নির্ভর করছি আমাদের এলাকায় এধরনের সবজী চাষ আগে ছিলো না। আমরা যে মজুরী পাই তাতে আমরা খুশি। কিন্তু রেজাউল করিম আবাদ করে তা দেখিয়ে দিয়েছে।রেজাউলের স্ত্রী রহিমা বেগম বলেন, আমি যুব উন্নয়ন অধিদফতর থেকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষিতা, আমি এই কর্মকাণ্ডে উৎসাহ দিয়েছি। আমি নিজে গরু, ছাগল, হাঁস, মুগরী পালন করি। তাতে আমার পরিবার অনেক আর্থিক লাভবান হয়। আমার এই কর্মকাণ্ড দেখে এলাকার অনেক মহিলা হাঁস, মুরগীর, গরু, ছাগলের চাষ করছে। এইভাবে চলতে থাকলে এলাকায় দরিদ্র মহিলারা নিজের পায়ে দাড়াতে পারবে।
তিনি বলেন, অন্য ব্যবসা করে অর্থ উর্পাজনে ঝুকি এবং আত্মকেন্দ্রিক। তাই নিজে স্বনির্ভর ও কিছু যুব সম্প্রদায়ের উৎসাহিত এলাকার দরিদ্র মানুষের কর্মসংস্থানের কথা ভেবে আমি এই প্রকল্পটি বেছে নিয়েছি। মাছ একটি জাতীয় সম্পদ তাছাড়া দেশীয় প্রয়োজন রয়েছে। সব মিলিয়ে নিজেকে স্বাবলম্বি মনে করি। এটা একটা যুব সমাজের প্রতিফলন ঘটবে। তাতে করে পল্লী অবকাঠামো উন্নয়নে সহায়ক ভূমিকা রাখবে। এই চাষে অনেক অর্থের প্রয়োজন সরকারি ও বেসরকারি আর্থিক প্রতিষ্টানের সহযোগিতা পেলে আরো বড় ধরনের প্রকল্প হাতে নেয়া যাবে। তিনি সরকারি আর্থিক সাহায্যের প্রার্থনা করেছে সরকারের কাছে।
ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট