দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগে পাবনায় জনস্বাস্থ্যের প্রধান প্রকৌশলী সাইফুর রহমানের অপসারণ দাবিতে মানববন্ধন: সীমাহীন অভিযোগ : প্রশাসন নীরব
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী সাইফুর রহমানের ঘুষ, দুর্ণীতি, স্বজনপ্রীতি, কমিশন বাণিজ্য ও আত্মীয়করণের বিরুদ্ধে পাবনায় মানবন্ধন কর্মসূচী পালন করেছে ভূক্তভোগী ঠিকাদারবৃন্দ। সোমবার (১০অক্টোবর) দুপুরে পাবনা প্রেসকাবের সামনে ঘন্টা ব্যাপি এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।মানবন্ধন চলাকালে বক্তব্য দেন জুনায়েদ কন্স্ট্রাকশনের ঠিকাদার মেহেদী হাসান হীরক, গহের কন্স্ট্রাকশনের গহের আলী, রফিক উদ্দিন শেক কন্স্ট্রাকশনের ঠিকাদার রফিক উদ্দীন প্রমূখ।বক্তারা বলেন, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী সাইফুর রহমানের বাড়ি পাবনার ঈশ্বরদীতে। এজন্য তার ভাগ্নে জামাই সেলিম হোসেনের নেতৃত্বে একটি সিন্ডিকেট পাবনার জনস্বাস্থ্য অফিস জিম্মি করে রেখেছে। তারা সাইফুর রহমানের যোগ সাজোশে তারা আত্মীরা কাজ হাতিয়ে নেয় এবং কমিশন বাণিজ্য করে অন্যদের কাজ দেয়। এতে পাবনার সাধারন ঠিকাদাররা কোন কাজ পান না। ফলে তারা চরম ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। তাই অবিলম্বে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলীর পদ থেকে সাইফুর রহমানকে বরখাস্ত করে এবং এই সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জোর দাবী জানান।মানববন্ধনে অংশ নেওয়া সংক্ষুব্ধ ঠিকাদার বৃন্দ তাদের লিখিত বক্তব্য সবাইকে বিতরণ করেন এবং সংশ্লিষ্ট সকল কার্যালয়ে প্রেরণ করেন।মানববন্ধনে আলোচকগণ তাদের লিখিত বক্তব্যে বলেন, পাবনা জেলার, ঈশ্বরদী উপজেলার লক্ষ্মীকুন্ডা ইউনিয়নের প্রয়াত আজিজুর রহমান ছিলেন একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে প্রাণদণ্ডে দণ্ডিত জামায়াতের প্রভাবশালী নেতা সাবেক নায়েবে আমির আবদুস সোবহান এবং জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের আমীর মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর আস্থাভাজন ও সহায়তাকারী। তার ছেলে মোঃ সাইফুর রহমান ওরফে (সবুজ) বর্তমানে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী। মেধাবী ছাত্ররাও যে দুর্নীতিতে চাম্পিয়ন হতে পারে, তার জলন্ত প্রমান এই সাইফুর রহমান। খুব কম সময়ের মধ্যে দুর্নীতির মাধ্যমে প্রধান প্রকৌশলী হওয়ার সৌভাগ্য অর্জন করেন। এতটা পথ চলার শীর্ষে অবস্থানের পিছনে রয়েছে এক অজানা কাহিনী। কথিত আছে মাত্র ৫০ কোটি টাকা ঘুষের বিনিময়ে প্রধান প্রকৌশলীর পদ অলংকৃত করেন। দৈনিক কর্মভিত্তিক বেতনে সহকারি প্রকৌশলী পদে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েও ২০১৭ সালে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরে ক্যাডারভুক্ত হয়। তার মাত্র ১৪ মাসের মাথায় ২০১৮ সালে রকেটের গতিতে পদোন্নতি পেয়ে প্রধান প্রকৌশলী পদে বসেই নেমে পড়েন ঘুষ বানিজ্যে। বিভিন্ন টেন্ডারে ১০%-২০% হাদিয়া নিয়ে থাকেন। এজন্য পাবনা-নাটোর ও সিরাজগঞ্জে অঘোষিত নির্বাহী প্রকৌশলী তারই এক নিকট আত্মীয় পাবনা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী অধিদপ্তরের এস্টিমেটর হেদায়েত কবির। তিনি কমিশনের মাধ্যমে নির্ধারিত ঠিকাদারদের হেদায়েত করে থাকেন। অযোগ্য অনেক আত্মীয় স্বজনকে সাইফুর রহমান জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী অধিদপ্তরে চাকুরীসহ ঠিকাদারির মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। পাবনার জনৈক সেলিম নামের এক ঠিকাদার সাইফুর রহামনের আত্মীয় হওয়ায় তার নেতৃত্বে পাবনা-নাটোর-সিরাজগঞ্জ এর জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী অধিদপ্তরের কতিপয় ঠিকাদারদের কাজ বন্টন করে দেওয়া হয়। এদের কারনে অনেক প্রকৃত ঠিকাদার গত কয়েক বছর কাজ থেকে বঞ্চিত রয়েছেন। ঈশ্বরদী ও পাবনা শহরে রয়েছে তার এক বিশাল গুন্ডাবাহিনী। তার সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কেউ কোন খোজ খবর নিলেই তাকে হুমকি অথবা টাকা দিয়ে মুখ বন্ধ করে দেয়া। ফলে স্থানীয়ভাবে তার বিরুদ্ধে সকলে প্রতিবাদ করতে ভয় পায়। জাতীয় পর্যায়ে তার বিরুদ্ধে দেশের স্বনামধণ্য মিডিয়াতে একাধিকবার প্রতিবেদন আকারে নিউজ প্রকাশিত হলেও এখন পর্যন্ত রয়ে গেছে ধরা ছোয়ার বাইরে। দুদকেও তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। এতসব অভিযোগেও পরেও সাইফুর রহমান রয়েছেন বহাল তবিয়তে। তার আত্মীয়ের মধ্যে টিপু ও ডালু এলাকার কুখ্যাত সন্ত্রাসী হিসেবে পরিচিত এবং তারা বেগম খালেদা জিয়ার বিশেষ সহকারী শিমুল বিশ্বাস এর ঘনিষ্ট। প্রকাশ্যে অনেক সময় তিনি জাতির পিতার প্রতি অসম্মান প্রদর্শন করেন। ২০২০ সালের ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসে তিনি বঙ্গবন্ধুর ছবি সম্বলিত ব্যানার ছিড়ে ফেলেন। আওয়ামীলীগের শাসন আমলে এই জামায়াত বিএনপির দোসর কট্টর সাইফুর যেভাবে কিছু বিপথগামী নেতা ও কর্মকর্তার অন্ধ সাহচর্যে নিজের সাম্রাজ্য গড়ে তুলল তা অকল্পনীয়।চার দফার মূল বিষয় :
১. এই মুহূর্তে সাইফুর রহমান কে প্রধান প্রকৌশলীর দায়িত্ব হতে অপসারণ পূর্বক তার দুর্নীতির সঠিক অনুসন্ধান এবং শাস্তির আওতায় নিয়ে আসতে হবে।
২. পাবনা জেলায় প্রধান প্রকৌশলীর আত্মীয় স্বজনের মাধ্যমে গঠিত সেলিম-গং সিন্ডিকেট ভেঙে ফেলতে হবে।
৩. পাবনায় কর্মরত প্রধান প্রকৌশলীর সকল আত্মীয় স্বজনদের অন্য জেলায় বদলি করতে হবে।
৪. শ্রেষ্ঠ দুর্নীতিবাজ সাইফুরের আত্মসাতকৃত সম্পদ বাজেয়াপ্ত করতে হবে, বিদেশে পাচার করা অর্থ ফেরত আনতে হবে।
ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট