হাফিজুর শেখ যশোর
যশোরে অনুুুষ্ঠিত হলো গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী মোরগ লড়াই’ দর্শকদের মুগ্ধ করলো। আবহমান গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী খেলা ‘মোরগ লড়াই’ দেখে মুগ্ধ হলেন যশোরের হাজারও দর্শক। যশোর শহরের টাউন হল ময়দানে মোরগ লড়াইয়ের আয়োজন করে যশোর ইনস্টিটিউট।যশোর ইনস্টিটিউটের প্রাণ পুরুষ খ্যাত রায়বাহাদুর যদুনাথ মজুমদারের ১৬৪তম জন্মদিন উপলক্ষে এই খেলার আয়োজন করা হয়।খেলা উপভোগ করতে মাঠের চারদিকে সমাবেত হন হাজারও দর্শক। এতে সাতক্ষীরার শ্যামনগরের পাঁচ জোড়া মোরগ দিয়ে খেলা দেখানো হয়। প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে মোরগ যুদ্ধ চললেও সব গ্রুপের খেলা শেষ করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ।
বিকেলে যশোর টাউন হল ময়দানে গিয়ে দেখা যায়, বাঁশঘেরা মঞ্চে মুখোমুখি পাঁচ জোড়া বিশাল আকৃতির মোরগ। পাশে দাঁড়িয়ে থাকা একজনের ইশারা পেতেই পরস্পরের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়লো যুদ্ধংদেহী দুটি মোরগ। শুরু হলো তুমুল লড়াই।প্রায় দুই ফুট উচ্চতার মোরগটি তার মোটা দুটি পা দিয়ে প্রতিপক্ষ মোরগটিকে সজোরে আঘাত করছে। এসব মোরগের পায়ের পেছনের একটি নখ ভীষণ ধারালো আর সূচাল থাকে। যুদ্ধের একপর্যায়ে একটি মোরগ ক্লান্ত হয়ে বসে পড়ল, যেন লড়বার শক্তি হারিয়ে ফেলেছে। একটু পর পর প্রতিটি মোরগের পরিচালকদের ক্লান্ত হওয়া মোরগ সরিয়ে দিয়ে নতুন মোরগদের ইশারা দিতে দেখা যায়।মোরগ লড়াই উপভোগ করতে আসা কয়েকজন বিনোদনপ্রেমী বলেন, সচরাচর এ ধরনের খেলা এখন আর চোখে পড়ে না। দীর্ঘদিন পর খেলা দেখে বেশ আনন্দ উপভোগ করতে পেরেছি। মাঝে মধ্যে এমন আয়োজন হলে ভালোই লাগে।
সাতক্ষীরার মোরগ দলের দলনেতা নরেস সরকার বলেন, টিপু সুলতান, সম্রাট আকবরসহ অনেক রাজা এই মোরগগুলো শখ করে পুষতেন। এদের লড়াই দেখাটাকে বিনোদনের অংশ হিসেবে নিতেন। তবে, এখন এই খেলাটি বাংলাদেশে তেমন দেখা না গেলেও তুরস্কের জাতীয় খেলা কিন্তু এই মোরগ লড়াই। ভারত, পাকিস্তান, মিয়ানমার, জাপানেও এই খেলার প্রচলন রয়েছে।তিনি বলেন, এসব মোরগ দুই ঘণ্টা লড়াই করতে সক্ষম। লড়াই করতে করতে নির্দিষ্ট ছকের বাইরে চলে গেলে মোরগের মালিক তাকে এক মিনিট পরিচর্যা শেষে আবারও লড়াইয়ের মাঠে নিয়ে আসেন। প্রতিপক্ষকে পরাজিত না করা পর্যন্ত মাঠে লড়াই চলতে থাকে।সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার ভেটকালি গ্রাম থেকে মোরগ লড়াইয়ে অংশ নেওয়া প্রমেশ কুমার সরকার বলেন, প্রতিটি মোরগের দাম ১০-৫০ হাজার টাকা। এই মোরগ পালন অত্যন্ত ব্যয়বহুল। তারপরও শখের বসে আমরা এসব পালন করছি। জীবিকা নির্বাহ নয়, বাপ-দাদার ঐতিহ্য আর মানুষের বিনোদনের জন্য এই খেলা দেখিয়ে থাকি।খেলা প্রদর্শন শেষে দলনেতাদের শুভেচ্ছা স্মারক দেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি যশোর ইনস্টিটিউটের সাধারণ সম্পাদক ডা. আবুল কালাম আজাদ লিটু।এ সময় উপস্থিত ছিলেন সহকারী সাধারণ সম্পাদক রওশন আরা রাসু, জেলা সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি তরিকুল ইসলাম তারু প্রমুখ।যশোর ইনস্টিটিউটের পরিচালনা পর্ষদের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক রওশন আরা রাসু বলেন, ‘রায় বাহাদুর যদুনাথ মজুমদারের ১৬৪তম জন্ম ও ৯০তম মৃত্যু দিবস উপলক্ষে স্মরণ উৎসবের আয়োজন করেছে যশোর ইনস্টিটিউট। এই উৎসব প্রাণবন্ত করতে আয়োজন করা হয় লাঠি খেলা ও মোরগ লড়াই। গ্রামবাংলার ঐতিহ্য পুনরুদ্ধারের জন্যই এই আয়োজন
ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট