হাফিজুর শেখ যশোর
ডাঃ শামারুখ হত্যার পুনঃ তদন্ত এবং বিচারের দাবীতে সংবাদ সম্মেলন করেছে, সন্তান হারা একজন বাবা
ডাঃ শামারুখ হত্যার পুনঃ তদন্ত এবং বিচারের দাবীতে সংবাদ সম্মেলন সন্তান হারা একজন বাবা। ১৩/১১/২২ রবিবার সকাল ১১,৩০। যশোর প্রেশক্লাবে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ডাঃ সামারুখের বাবা মোঃ নুরুল ইসলাম। ডাঃ শামারুখের ৮ম শাহাদাত বার্ষিকী। নানা বিচারের দাবিতে যশোরের ভুক্তভূগি মানুষ আজ প্রেস ক্লাবের সামনে রাস্তায়।সাধারণ মানুষ আজো যতটুকু ভাল আছে সে আপনাদের কল্যাণে কারণ যে কোন ব্যাক্তি প্রতিষ্ঠান যত ক্ষমতাধর হোক না কেন, অন্যায় দূর্নীতি বা খারাপ কাজ করতে গেলে অন্ততঃ ৭ বার ভাবে দেশের সাংবাদিকের কথা মিডিয়ার কথা। ভাস্কর টিপু পরিবারের করাল থাবা থেকে আমিও জীবনে রক্ষা পেয়েছি বা এখনো বেঁচে আছি রাবব্বুল আলামিন ও আপনারা আমার পাশে ছিলেন এবং আছেন বলেই।ক) আপনারা ব্যানারের ছবির দিকে একটু খেয়াল করলে বুঝবেন, খুনি ৰাম হাত নিয়ে হত্যা করেছে। গলার বাম পাশে এক আঙ্গুলের (বুড়ো আঙ্গুলের) চাপের দাগ, ডান পাশের দুই আঙ্গুলের চাপের দাগ। গলায় উড়নার ফাঁস থাকলে গিয়া পিছনের দিকে বা পাশে থাকে। সে নিজে দড়ি বেধে ঝুলে পড়া যায় না। তাই গলার দুই পাশের ঐ দুটি নাগ গিরা বা উড়নার দাগ নয় ।
খ) বাথরুমের সিলিং এর হাইট এড যেখানে কোন হুক নেই মেয়ের উচ্চতা ৫-২.৫ বাথরুমের সাথে ভেন্টিলেটারে গ্রীল আছে সেই গ্রীল থেকে থেকে ৫-২’ উচ্চতা লাগানো, ৫-২ উচ্চতার গ্রীলের কোন অংশে উড়না বেধে ফাঁস লাগিয়ে ঝুলে পড়া সম্ভব কিনা?
গ) তাদের ভাষ্য মতে শামারুখ যখন আত্মহত্যা করে তখন তারা সবাই বাসায় ছিল আত্মহত্যাকারীর গোংড়ানির শব্দ ও হাত পা ঝাপটানোর শব্দ কিছুই কি তাদের কানে যায় নাই? ঘ) টের পাওয়ার পর তারা দুইশ গজ দূরে অবস্থিত ধানমন্ডি থানার পুলিশ না ডেকে নিজেরা লাশ নামালেন কি উদ্দেশ্যে ?
৩) বাসার ঠিক অপজিটে গণস্বাস্থ্য হাসপাতাল থাকা সত্ত্বেও ৫নং রোডে (বাসা ৬ নং রোডে) সেন্ট্রাল হাসপাতালে নিলেন কোন উদ্দেশ্যে ? যে হাসপাতালের একজন পার্টনার ১নং আসামী ডাঃ জেসমিন আরা।
চ) মেডিকেল বোর্ডের মাধ্যমে পোষ্টমর্টেম রিপোর্ট পাওয়া দরখাস্ত করেছিলাম। ফরেনসিক ডাকার সোহেল মাহমুদ আমাকে বললেন রিপোর্ট প্রায় শেষ, মার্ডার বলেই মনে হচ্ছে, গলার টিস্যু পরীক্ষা করতে দিয়েছি রিপোর্ট পাওয়া গেলে জানানো যাবে। তারপর তিনি রিপোর্ট দিলেন, শ্বাস রোধে মৃত্যু হয়েছে। (গলা টিপে ধরলে, বালিশ চাপা দিলে, গলায় গামছা দিয়ে চেপে ধরলে শ্বাস রোধ হয়)। তার লিখেছেন সুইসাইডাল ইন নেছার, ডাক্তারের যদি সন্দেহ না থাকতো তিনি সরাসরি লিখতেন সুইসাইডাল বা আত্মহত্যা। সেক্ষেত্রে পুলিশের আলামত গ্রহণ পারিপার্শ্বিক সাক্ষ্য প্রমান গ্রহণ সাপেক্ষে সুরত হাল রিপোর্ট প্রতিবেদন দেওয়ার নিয়ম আছে।
তদন্ত কর্মকর্তার কর্মকাণ্ডঃ
ক) তিনি আমার লোকজন এবং স্বাক্ষীদের ডেকে নিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা জিজ্ঞাসাবাদ অব্যহত রাখতে উল্টোপাল্টা প্রশ্ন করতে তারা বেরিয়ে জানাতো (জিজ্ঞাসাবাদের ধরণ দেখে মনে হয় খুন আমরাই করেছি।
খ) আমি আমার মেয়ের মোবাইল নম্বর আসামীদের মোবাইল নম্বর লিখিতভাবে থানায় জমা দিয়ে কললিষ্ট এবং ভয়েজ রেকর্ড নিতে বলি কারণ এগুলো দেখলেই বুঝা যাবে কে কাকে দিয়ে কিভাবে হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে। আমি গ্রামীন ফোন থেকে অন্যভাবে জানতে পারি ১৩/১১/১৪ ইং তারিখ সকাল ৯.৩০-১১.৪০ সময়ের মধ্যে বাপ-বেটা নিজের ৩৫ বার, মা-ছেলে নিজের মধ্যে ১৩ বার কথা বলেছে। তদন্তকারী কর্মকর্তা তার প্রতিবেদনে কোথাও বিষয়টি উল্লেখ করেন নাই।
গ) আসামীর বাড়ির ড্রাইভার ও কাজের বুয়া দারোয়ানের জিজ্ঞাসাবাদ করতে বলেছিলাম। তিনি তা করেন নাই।
ঘ) দ্বিতীয় পোষ্টমর্টেম করার সময় আমি নিজে তদন্ত কর্মকর্তাকে দেখালাম- গলার দাগ, পিঠের দাগ, হাত কাটার দাগ, মাথার পিছনে জখমের দাগ উনি সুরাত হাল রিপোর্টে ঐ গুলি রিপোর্টে উল্লেখ না করে Decomposed Decomposed লিখে ফর্মে আমাকে স্বাক্ষর দিতে পিড়াপিড়ি করে, আমি স্বাক্ষর দিই নাই
3) আমি বলেছিলাম মেয়ের আলমারীতে টিপু সুলতানের কিছু ভয়ঙ্কর দলিল (ড্রাগ ডিলিং পেপার) কাগজপত্র আছে সেগুলি উদ্ধার করেন তিনি তা করেন নাই।
(চ) তিনি একটি সুইসাইডাল নোটের কথা উল্লেখ করেছিলেন আমি বললাম মেয়ের অনেক লেখা আছে আমার বাসায় আছে নিয়ে যান, তিনি নিলেন না। এবিষয় আপনারা একটা ঐতিহাসিক ঘটনা জানেন জার্মানীর এক ভদ্রলোক হিটলারের নিজের হাতের লেখা ডাইরী নিলামে তুলেছিলেন । অনেক টাকায় বিক্রয় করেছিলেন। পরে পরীক্ষা করে দেখা যায় হাতের লেখা হিটলারেরমত হলেও। যে কালী ও কাগজ ব্যবহার করা হয়েছিল ঐসময় সেই কালী এবং কাগজ তৈরী হয় নাই।
ছ) প্রতিবেদনকারী কর্মকর্তার উল্লেখিত ভূমিকার জন্য আমি এই প্রেস ক্লাবে সংবাদ । সম্মলেন করি। কিন্তু দুঃখের বিষয় বিজ্ঞ আদালত আমার অনাস্থা, নারাজী কোনটায় গ্রহণ না করে বিতর্কিত রিপোর্ট গ্রহণ করেন এবং রায় প্রদান করেন। যেখানে কোথাও বলা হয় নাই ভাই শামারুখের মত একজন উদীয়মান ডাক্তার দেশের সম্পদ কেন কি কারণে কার প্ররোচনায় এবং কিসের অভাবে কোন ফ্রাস্ট্রেশনে আত্মহত্যা করেছে ?
এরপর আমি উচ্চ আদালতে হাইকোর্ট ডিভিশনে আপীল করি। আপীল নং- CMC No. 29369/2016 যেখানে উপরোক্ত ঘটনার উল্লেখ করি। ২ বছর পর ২০১৮ সালের জুলাই মাসে উক্ত বিজ্ঞ আদালত রায় দিলেন শুধুমাত্র ডাক্তারের দেওয়া ফরেনসিক রিপোর্ট সুইসাইডাল ইন নেচার লেখার উপর ভিত্তি করে। যে দিন রায় হয় শারীরিক অসুস্থ্যতার কারণে আমার উকিল জনাব আব্দুল মোতালেব কোর্টে যেতে পারেন নাই। তার অনুপস্থিতিতে রায় দেওয়া হয়। বিপক্ষের ৩ জন উকিল এবং রাষ্ট্র পক্ষের ৪ জন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। এরপর ২০১৯ সালে আমি সুপ্রীম কোর্টের আপীল বিভাগে আবেদন করি। পিবিআই কর্তৃক হত্যাকান্ডের সঠিক পুনঃ তদন্তের জন্য। অথচ আমার আবেদন অদ্যাবধি গ্রহণ করা হয় নাই। গ্রহণ হওয়া না হওয়ার বিষয়ে শুনানী একের পর এক পিছিয়ে যাচ্ছে। আপনারা জানেন এবং মিডিয়ার শুনে আমরা জানতে পেরেছি এধরনের ১০ টি মামলা পিবিআই কর্তৃক পুনঃ তদন্তে দেখা গেছে ৯ টি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড। অদ্য দিকে যদি ধরে নিই আত্মহত্যা করেছে তাহলে এই আত্মহত্যার পিছনে প্ররোচনাকারী ও উষ্কানী দাতা কে বা কারা। তাদের তো শাস্তির আওয়তায় আনা যেতো। আমি পুলিশ সুপার ও পুলিশ প্রশাসনকে অনুরোধ জানাচ্ছি যেন এটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত হক, তাহলে আমি বিচার পাবো এমনটি জানান বাবা নুরুল ইসলাম। আমি এই মামলায় সুষ্ঠ বিচার দেখে যেতে চায়
ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট