আগমনী চক্রবর্তী
===================================
বিচিত্র মানবমন
ক্ষুদ্র জীবন, বাঁচার তাগিদ, সংসার যাতনা সব মিলিয়ে মানুষ এক যন্ত্র। তার দেহকলে যতক্ষণ নিঃশ্বাস আছে ততক্ষণ নতুন আড়ম্বরে নিজেকে নিয়োজিত রাখে। এ সংসার বড় রহস্যময়; দু’দলের টানাপোড়েনে প্রশ্নবিদ্ধ হয় একদল বিদগ্ধ মানবতা।
দু’দলের ১ম পক্ষ আত্মনিবেদনের মাধ্যমে অন্যের সুখের হাসি দেখে ভালোবাসা খোঁজে। আর ২য় পক্ষ সেই সুখকে সম্বল করে নিজে লেফাফাদুরস্ত অসত্যটাকে সত্য বলে প্রমাণ করে বীরত্বের স্বাক্ষর রাখে। প্রকৃত অর্থে দ্বিতীয় পক্ষ কেবলই সুবিধাভোগী, প্রশংসাপ্রিয় ও অন্যায়-নিষ্ঠুরতার জনক। তারা কাউকে সুমিষ্ট ফল না দিতে পারলেও ফলের বৃক্ষের উৎপাটন করে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে।
আমাদের ঘুনে ধরা পারিবারিক ও সামাজিক অবক্ষয়ে আসল ফেলে নকলের জয়জয়কার করে যারা, প্রকৃত অর্থে এই লোকগুলো বড়ই ভয়ংকর। তাদের মেরুদন্ড সোজা নয়, তারা অন্যায়ের উপর ভর দিয়ে চলে। ভুলে যাবেন না: ২য় পক্ষ, আপনি অন্যায়ের হোতা, সাহায্যকারী বিষবাষ্প। সমাজ আপনাকে মনে রাখবেনা।
পঙ্কিলতা আপনি প্রশ্রয় দিচ্ছেন, অন্যায়ের সম্মুখ যোদ্ধা আপনি।
চোখ খুলে বিশ্বকে দেখুন, প্রকৃতি তার নিজের গতিতে নিঃশ্বাস গ্রহণে অক্সিজেন বিলায়, কার্বনডাইঅক্সাইড নয়, আম গাছ তার গাত্রে কাঁঠাল ধারণ করে না, তবে আমরা কেনো এমন?
কতিপয় সামাজিক মনুষ্যগ্রাসি যারা নিজের মুখোশটাকে ঢাকতে সুন্দর সকাল বিনির্মাণে কার্যরত সত্যের দিশারীদের বিষন্নতায় ফেলে নিজেকে ভালো মানুষ বানানোর চেষ্টায় মগ্ন আছেন। এখনও সমাজ-সংসার সত্যের উপর দাঁড়িয়ে। সুবিধাবাদী আপনি কিন্তু সেখানে ওয়ান-টাইম ইউজ গ্লাস-প্লেটের সামিল। সামান্য ফুৎকারে উড়ে যাবে আপনার কুকৃতি প্রজন্মের দৌরাত্ম্যে।
তাই আসুন তেলে তেলে তৈলাক্ত না করে সত্য নিষ্ঠুর হলেও তাকে মেনে নিয়ে ক্ষুদ্র জীবনের সার্থকতা খুঁজে নেই। বিচিত্র মানব মনের বিচিত্র সার্থকতার উত্তরসূরী হই।
প্রশ্নবিদ্ধ ক্ষতবিক্ষত সহস্র মন কিংবদন্তির সন্ধান করবে। ধূপ হয়ে গন্ধ বিলাই। আসুন গরল পানে অমৃত ঢালি।
_______________________________
আগমনী চক্রবর্তী,
সহকারী অধ্যাপক (বাংলা),
চাটমোহর মহিলা ডিগ্রি কলেজ,
চাটমোহর, পাবনা।
ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট