জি আর রনক রাজশাহী ব্যুরোঃ
রাজশাহীতে রাজপাড়া থানা ওসির যতো বিতর্কিত কর্মকান্ড।রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ আরএমপির রাজপাড়া থানার ওসি সিদ্দিকুর রহমান এর নির্দেশে মাদকব্যবসায়ী ও বিভিন্ন অপরাধীদের কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে থানার কিছু অসাধু পুলিশ সদস্যরা। এই বিতর্কিত ওসির বিরুদ্ধে এর আগেও মাদকব্যবসায়ীদের মাদকসহ আটক করে তাদের কাছ থেকে অর্থ নিয়ে ছেড়ে দেয়া,চোরাই গরু বিক্রি করে দেয়া, হত্যা মামলাকে আত্মহত্য বলে চালিয়ে দেয়া, একাধিক নাশকতার বিচারাধীন মামলার আসামি ও সাবেক শিবির নেতাসহ জামায়াত নেতাদের দেওয়া সংবর্ধনা গ্রহণ করাসহ নানা অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে। কিছুদিন আগে এই ‘ওসির জন্য’ ঘুষ চেয়ে প্রত্যাহার হয়েছেন থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো: ওয়ারেশ পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে পুলিশের সামনেই সাংবাদিকদের ওপর হামলা ও হত্যার হুমকি দেওয়ার ঘটনায় এই ওসির বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগে তুলে তাকে প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছিলেন সাংবাদিকেরা। এ ছাড়াও রাজপাড়ার মতো গুরুত্বপূর্ণ থানায় থাকার যোগ্য নন বলে তারা বলেন, এমন বিতকৃত ওসির যোগ দেওয়ার কয়েক দিনের মধ্যে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতাল ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে উত্তপ্ত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। সেদিনই ওসিকে প্রত্যাহার করা উচিত ছিল। কারণ, তিনি পরিস্থিতি মোকাবিলায় ব্যর্থ।
জানা যায়, সিরাজগঞ্জ এর সন্তান এএসএম সিদ্দিকুর রহমান ২০০২ সালে বাংলাদেশ পুলিশে সাব ইন্সপেক্টর (এসআই) পদে যোগদান করেন। দির্ঘ ১১বছর পরে ২০১৩সালে পুলিশ পরিদর্শক হিসেবে পদন্নতি লাভ করেন। এর পর বিভিন্ন থানায় কর্মরত ছিলেন সিদ্দিকুর রহমান। গত ২০১৮ সালে নওগাঁ জেলার রানিনগর থানার অফিসার ইনচার্জ হিসেবে যোগদান করেন এএসএম সিদ্দিকুর রহমান। এর পরে ২০২০ সালের রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশে বদলি নিয়ে আসেন তিনি। আরএমপির মতিহার থানা,কাটাখালি থানায় ও বর্তমানে রাজপাড়া থানায় কর্মরত আছেন তিনি। এই দির্ঘ ১৯বছরের চাকুরী জীবনে ২৩টি দন্ডে দন্ডিত হয়েছেন এই ওসি এএসএম সিদ্দিকুর রহমান। এর মধ্যে একটি গুরুদন্ডে ও ২২টি লঘু দন্ডে দন্ডিত হয়েছেন তিনি। এর মধ্যে নওগাঁ জেলার রানিনগর থানার অফিসার ইনচার্জ থাকা কালিন সময়ে মাদক ও মটরসাইকেলসহ মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে রফা দফার অভিযোগের ঘটনায় বিভাগীয় মামলাটি তদন্ত করছেন বর্তমানে আরএমপি মতিহার জোনের এডিসি একরামুল হক।
নওগাঁর রাণীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ থাকাকালিন সময়কালীন অপরাধের কিছু নমুনা…..
০১ নওগাঁর রাণীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ থাকাকালিন সময় ২৫ আগস্ট ২০১৮ ইং তারিখে ঘোষগ্রাম-বেতগাড়ীতে উদয়ন ক্রীড়া সংসদ কর্তৃক এক গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের অবৈধ লটারির ড্র-এর সময় ঘোষগ্রাম কফিলিয়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে সন্ত্রাসীদের গুলিতে ৩জন আহত হয়েছিলেন। এ সময় আহত ৩ জনের মধ্যে মো: রোবায়েত হোসেন (১০) নামের ৬ষ্ঠ শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর মাথায় গুলি লাগায় তাকে বগুড়া শহীদ জিয়া মেডিকেল কলেজ এন্ড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিলো ।এ মামলায় তিনি ৫লক্ষ টাকার বিনিময়ে জড়িতদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না নিয়ে তার মনগড়া মামলা করেছিলেন এএসএম সিদ্দিকুর রহমান।
০২ নওগাঁর রাণীনগর উপজেলায় ২০১৮ সালের মে ২৭ একটি সরকারি পুকুরের দখল নিয়ে বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষ হাতুড়িপেটা ও কুপিয়ে টালিগ্রাম ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি সৌখিনপাড়া গ্রামের মৃত সৌখিন উদ্দিনের ছেলে আজিম উদ্দিন (৩৫)কে হত্যা করে। এ ঘটনাতেও কয়েক লক্ষ টাকার বিনিময়ে জড়িতদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না নিয়ে তার মনগড়া মামলা করেছিলেন।
০৩ নওগাঁর রাণীনগরে উপজেলার খাঁনপুকুর বাজার থেকে ২০১৯ সালের ০২ এপ্রিল ১০ কেজি গাঁজাসহ ৩ মাদক কারবারিকে আটক করেছিলেন রাণীনগর থানা পুলিশ। এ সময় তাদের সাথে থাকা একটি ডিসকভার ১১০ সিসি মটরসাইকেল জব্দ করে পুলিশ । তিনজনকে আটক করলেও বগুড়ার আদমদিঘী উপজেলার বড়িয়াবার্তা গ্রামের শ্রী গষ্ট মহন্তের ছেলে শ্রী গৌতম মহন্ত (৩৫) ও মৃত দানেজ আলীর ছেলে ময়েন উদ্দিন (৪৬) নামে ২জনকে ১কেজি গাঁজাসহ মামলা দিলেও মাদকের ডিলারকে ৯০হাজার টাকা নিয়ে ছেড়ে দেয় ওসি এএসএম সিদ্দিকুর রহমান।
তার চাকুরী জীবনের আরো বিতর্কিত কর্মকান্ডনিয়ে আগামিকাল বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শকের কাছে অভিযোগ দেবে সাংবাদিকেরা। এই বিতর্কিত ওসির অপসারন ও তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা থাকলেও এখন পযর্ন্ত কোন উদ্দোক গ্রহন করেনি রাজশাহী মেট্রোপল্টিন পুলিশ আরএমপি মহাদয়।
ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট