মো: সৈকত জামান(প্রিন্স)
ফুলছড়ি প্রতিনিধি:
হেঁটেই পাল্লা দেয়া যাচ্ছিল চলন্ত রিকসার সঙ্গে, কখনো কখনো পায়ের গতি যেন বেশি। মাথা নুয়ে চালাতে থাকা চালকের বয়স যে ৭০ বছর। হাঁপিয়ে হাঁপিয়ে প্যাডেল চেপেই চালাচ্ছেন রিকসা। যান্ত্রিক এ যুগে অটোরিকসার দাপটে এমন দৃশ্য মেলা ভার।
চালক জানালেন তার নাম মো. মকবুল হোসেন। জীবনের পড়ন্ত বেলায় এসেও ‘পা’ তার ভরসা। মেশিনের কারিশমায় নয়, পায়ের চাপে চলে তার রিকসা। জীবিকা নির্বাহে মকবুল মিয়া প্রায় ৩৬ বছর ধরে রিকসা চালান। সংসারের সচ্ছলতা ফেরাতে ও নিজেকে সুস্থ রাখতে তিনি এ পেশাকে বেছে নিয়েছেন।
ফুলছড়ি উপজেলার কালির বাজার এলাকার গতকাল শনিবার বিকেলে কথা হয় মকবুল মিয়ার সাথে। প্রথমবার ছবি তোলার সময় খেয়াল করেননি। ‘ও চাচা ও চাচা’ মৃদুকণ্ঠের ডাকও পৌঁছাচ্ছিল না তাঁর কানে। বাধ্য হয়েই একটু জোরে ডাকা। রিকসা থামানোর অনুরোধ করতেই এক সেকেন্ডও দেরি করেননি ব্রেক কষতে।
কথা হলে মকবুল মিয়া জানান, তার প্রতিদিনের আয় গড়ে ৭০ থেকে ১০০ টাকা। শুধু বিকেলে তিনি রিকসা চালান। তবে বয়সের ভারে এখন আর যাত্রী পরিবহন করতে সমস্যা হয়। কালির বাজার থেকে দক্ষিণ বুড়াইল পৌঁছে দিলে ৫ টাকা আয় করেন আবার খালি রিকসা নিয়ে বাজারে আসেন আবার কেউ নিয়ে গেলে ধীরে ধীরে ছুটে চলেন তিনি ।
ছেলে ছামসুল মিয়া রাস্তার পাশে একটি চায়ের দোকান চালিয়ে আয় থেকে সংসার চলে। দুই সন্তানসহ এখন পরিবারের সদস্য সংখ্যা পাঁচজন। মকবুল মিয়া জানান, বয়সের কারণে যাত্রী পরিবহনে কিছুটা কষ্ট হয়, যে কারণে তিনি এখন সকাল ও দুপুরে রিকসা চালান না। তবে সাপ্তাহিক বন্ধের দিন আয় অনেকটা কমে আসে। সুস্থ থাকলে জীবনের শেষদিন পর্যন্ত রিকসা চালিয়ে যেতে চান বলে জানান মকবুল মিয়া।
ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট