স্টাফ রিপোর্টার-ইসলামী বিশ্বাবিদ্যালয়(কুষ্টিয়া থেকে):
“বাংলাদেশ বার কাউন্সিল লিখিত পরীক্ষার পদ্ধতি ও
ফলাফল এবং প্রাসঙ্গিক কথা”
বাংলাদেশের আইনজীবীদের নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা “বাংলাদেশ বার কাউন্সিল”।
বাংলাদেশ বার কাউন্সিল বাংলাদেশের আদালতে আইন প্র্যাকটিস করার জন্য অনুমতি সনদ প্রদান করে থাকার পাশাপাশি আইনজীবীদের কার্যবিধি দ্বারা নিয়ন্ত্রণ ও স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় দেখাশোনা করে থাকে।
বার কাউন্সিল একটি স্বায়ত্ব শাসিত সংস্থা।
আইনজীবী পেশাটি একটি অবৈতনিক ও স্বাধীন পেশা।
মুলত এ পেশায় যারা নিয়োজিত থাকেন তাদের কে অ্যাডভোকেট বা আইনজীবী বলা হয়ে থাকে।
এ পেশার আরো একাধিক নাম থাকলেও মুলত এ দুটি নামে জন সাধারণ তথা সকল শ্রেনী পেশার লোকেরা চিনে থাকেন!
এই আইন পেশায় যারা নাম লেখানোর জন্য অনুমতি সনদ বা ‘বার সনদ’ অর্জন করতে চান, তাদের কে কঠিন তিনটি ধাপ পেরো’তে হয় পরীক্ষার নামে! আইনের উপর স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করে ছয় মাস শিক্ষানবিশ কাল সমাপ্ত করতে হয়,
এছাড়াও নুন্যতম একজন দশ বছরের প্র্যাকটিস কারী সিনিয়রের অধীনে।
তার পর সনদ সংগ্রহ/অর্জনের জন্য
প্রথমে ১০০ নম্বরের এমসিকিউ পাশ করতে হয়, তাতেও নেগেটিভ মার্কিং রয়েছে এক ঘন্টা সময়ের প্রিলিমিনারী পরীক্ষায়।
তারপর আবারও সময়ের সবচেয়ে কঠিন একধাপ পরীক্ষা, যার নাম বার কাউন্সিল লিখিত পরীক্ষা।
লিখিত পরীক্ষা হয় ১০০ নম্বরের, পাশ করতে প্রয়োজন ৫০ নম্বর।
এখানেই যত প্রকার বিপত্তি একজন লিখিত পরীক্ষার্থীর…
সময়ের সবচেয়ে কঠিন এক পরীক্ষার নাম বার লিখিত পরীক্ষা!
এই পরীক্ষায় ১০০ নম্বরের মধ্যে একজন পরীক্ষার্থী পাশ করতে ৫০ নম্বর পেলেই চলে কিন্তু কত নম্বর পেয়ে একজন সনদ সংগ্রামী অকৃতকার্য হয়…
সেটা কোন ভাবেই পরীক্ষার্থী জানতে পারেনা!
প্রিলিমিনারী পরীক্ষা
এমসিকিউ পদ্ধতিতে হয় এবং এমসিকিউ’র উত্তর পত্র দেখা হয় বুয়েটে কম্পিউটারের মাধ্যমে।
আর লিখিত পরীক্ষার খাতা দেখে থাকেন জুডিসিয়াল সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে দায়িত্ব প্রাপ্ত পরীক্ষক মহোদয় গন।
প্রকাশ থাকে যে, বিভিন্ন আদালতের মাননীয় বিচারক গন, ম্যাজিস্ট্রেট গন।
কিন্তু খাতা দেখতে ও মার্কিং করার বিষয়ে কোন পরীক্ষার্থীর আপত্তি বা
বিপত্তি নেই…
আপত্তি হলো খাতার যে মুল্যায়ন করা হলো তা
সঠিক ভাবে সঠিক স্থানে পৌঁছাচ্ছে কিনা!
প্রশ্ন উঠতেই পারে…
যে একজন মেধাবী শিক্ষার্থীর রেজাল্ট যখন কৃতকার্য হয় তখন সে কত পেয়ে পাশ করেছে সে বিষয়ে মাথা ব্যাথা থাকেনা।
আর ঐ মেধাবী শিক্ষার্থীই যখন অকৃতকার্য হয় তখন তার মনে প্রশ্ন উঠতেই পারে,
যে আমি কত নম্বর পেয়ে ফেল করলাম!
তখন তিনি যুক্তিযুক্ত কারনে খাতা দেখতে চাইতে পারেন বা রিভিউ করতে পারেন বা চ্যালেঞ্জ করতে পারেন।
কিন্তু বার কাউন্সিলের পরীক্ষা সময়োপযোগী ও গতানুগতিক যুগোপযোগী করা হলেও রিভিউ বা রিভিশন/চ্যালেঞ্জ করার বিষয়টি সংযোজন করা সময়ের দাবী বা উচিত বলে আমি মনে করি……!
গত ১৭ই সেপ্টেম্বর ২০২২ইং
বাংলাদেশ বার কাউন্সিল লিখিত পরীক্ষায় সব মিলিয়ে
১৩,৯৪৫ জন সনদ প্রার্থী অংশ গ্রহন করেন।
সময়ের সবচেয়ে কঠিন পরীক্ষা হিসেবে খ্যাত, বেতন ভ্রাতা বিহীন স্বাধীন পেশা, আইন পেশা!
এই পেশায় নিয়োজিত হওয়ার জন্য সনদ যোদ্ধাদের কঠিন পরিশ্রম করে সফলতা অর্জন করতে হয়।
বার কাউন্সিল লিখিত পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয় গত ৮ই ডিসেম্বর’২০২২ইং
মোট ১৩,৯৪৫ জন সনদ প্রার্থীর মধ্যে ৫,২০৯ জন পাশ করেন। যা হিসেব অনুসারে ৩৮%।
৩২৪জন সনদ প্রার্থীর উত্তর পত্র রয়েছে তৃতীয় পরীক্ষকের তত্বাবধানে!
হাজারও অকৃতকার্য শিক্ষার্থী চাঁপা ক্ষোভ, বুক ফাটা আর্তনাদ, ঘৃনা ভরা দৃষ্টি নিয়ে পথ চলতে, বাসা থেকে বের হতে বিমর্ষ অবস্থায় আছেন।
আল্লাহর দরবারে নির্বাক ইশারায় প্রতিকার প্রার্থনা করে চলছেন।
কেনো ভালো পরীক্ষা দিয়েও অকৃতকার্য হতে হলো!
কত নম্বর পেয়ে অকৃতকার্য হলো
সে কথা বস জিজ্ঞাসার উত্তর কোথাও খুঁজে মেলাতে না পারার আক্ষেপে…
আইনে রিভিউ/রিভিশন বা চ্যালেঞ্জ করার বিধান না থাকায় নিঃরবে অশ্রু বিসর্জন দেওয়া ছাড়া কোন উপায় নেই…
সময়ের দাবী ও বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের কার্যক্রম কে আরো স্বচ্ছতা ও জবাব দিহিতা পুর্ন করতে
বার কাউন্সিল লিখিত পরীক্ষার ফলাফল পুনর্বিবেচনা করার জন্য
বিধি সংশোধন করে রিভিউ/রিভিশন বা চ্যালেঞ্জ করার বিধান সংযুক্ত করা হোক!
অকৃতকার্য পরীক্ষার্থীর খাতা দেখানোর জন্য আইন সংশোধনের দাবী হাজারও সনদর।
এছাড়াও লিখিত পরীক্ষার খাতায়
ও এমআর শীট সংযুক্ত করে পরীক্ষা নেওয়ারও দাবী হাজারও সনদ যোদ্ধাদের।
উপরোক্ত ব্যবস্থা গ্রহন ও আইন সংশোধন করে আগামী পরীক্ষা নেওয়া হলে হাজার-হাজার পরীক্ষার্থী বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ও সদস্যদের প্রতি আজন্মকাল রক্ত মাংসে কৃতজ্ঞ রবে…
দোওয়া করবে আমরন! সময়োপযোগী আইন প্রনয়নকারীদের প্রতি…
তাদের উত্তরসুরীদের প্রতি…
তাই বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ও কর্মকর্তাদের সুচিন্তিত পরিকল্পনায় সিদ্ধান্ত গ্রহন করত আইন-বিধি সংশোধনের মাধ্যমে আগামী পরীক্ষা গ্রহনের উদ্যোগ নিতে সদয় মর্জি হয়……!
তারিখঃ ১০ই ডিসেম্বর’২০২২ইং
বিনীত
এস এম মনিরুজ্জামান আকাশ
কবি,সাংবাদিক ও কলামিস্ট
সভাপতি-
গ্রিন পিস বাংলা,
পাবনা জেলা শাখা,পাবনা।
ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট