কুমিল্লা জেলা প্রতিনিধি, এস এম মনি সরকারঃ
কর্মক্ষেত্রে সাধারণ চাকরিজীবীদের ছুটি থাকলেও কৃষকদের কোনো ছুটি নেই, একটার পর একটা কৃষিকাজ লেগেই থাকে। আর সেই কাজ নিয়েই ব্যস্ত থাকতে হয় তাদের। আমন ধান কাটার পরে শুরু হয়ে যায় বিভিন্ন কৃষি আবাদ। শাক-সবজি, গম, ভুট্টাসহ নানা ধরনের চাষাবাদ শেষ হতে না হতেই আবার শুরু হয়ে যায় বোরো ধান রোপণের সময়। ন্যায্য দাম না পেয়েও বোরো ধান লাগানোর কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন কুমিল্লার চাষিরা।
এদিকে সকালের শীত উপেক্ষা করে সন্ধ্যা অবধি বোরোর জমি প্রস্তুত ও চারা রোপণ কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। কেউবা জমিতে হাল চাষ দিচ্ছেন।
কেউ জমির আইলে কোদাল কিংবা জৈব সার বিতরণ কাজে ব্যস্ত। কেউ সেচের জন্য ড্রেন নির্মাণ কিংবা পাম্পের বা শ্যালো মেশিনের জন্য ঘর তৈরি করছেন।
আবার অনেকে তৈরি জমিতে পানি সেচ দিয়ে ভিজিয়ে রাখছেন। আনুসঙ্গিক কাজ শেষ করে কেউবা বীজতলা থেকে চারা তুলে তা রোপণ করছেন ক্ষেতে।
চারা রোপণের প্রতিটি কাজ ঠিকমতো করলেও মনে শান্তি নেই কৃষকদের। সবার মনেই রয়েছে হতাশা। ধানের ন্যায্য দাম না পেলে লোকসান গুনতে হবে।
ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার নাল্লা গ্রামের কৃষক আবদুল কাদের বলেন, কিছুদিন ধরে ধানের ন্যায্য দাম না পাওয়ায় লোকসান গুনতে হচ্ছে আমাদের। তাই ধান চাষাবাদ করে আমরা সব সময় হতাশার মধ্যেই থাকি। আবার মাঝেমধ্যে আশায় বুকও বাঁধি, না জানি কখন ধানের দাম বেড়ে যায়। তিনি আরো বলেন এ বছর নতুন জাতের বি আর ৫৮ ধান ১৬৫ শতক জায়গায় চাড়া রোপণ করতেছি, তবে এখন পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে রয়েছে তবে কুয়াশায় কারণে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে ।
বুড়িচং উপজেলা সদর ইউনিয়নের জগতপুর গ্রামের কৃষক আবদুল হক বলেন , বোরো ধান লাগাতে দিন-রাত পরিশ্রম করতে হয়। এছাড়া বোরো আবাদে খরচও বেশি হয়। বোরো ধান লাগানোর পর থেকে তিন-চার দিন পর পর সেচ দিতে হয়। তারপরও যদি ন্যায্য দাম না পাই তবে লোকসানের মুখে পড়তে হবে আমাদের। তাই সরকারের কাছে আমাদের আবেদন। বোরো আবাদে যেন আমাদের ভর্তুকি দেওয়া হয়।
কুমিল্লা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এর উপ পরিচালক মোঃ মিজানুর রহমান বলেন এ বছর কুমিল্লায় ১ লক্ষ ৬০ হাজার ৩ শত হেক্টর বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। বিভিন্ন উপজেলায় জামিতে ধানের চারা উত্তলন ও জমিতে চারা রোপণ শুরু হয়েছে, এখন ১৫/১৬ শত হেক্টর আবাদ হয়েছে ও পর্যায়ক্রমে শতভাগ লক্ষ্য মাত্র অর্জিত হবে । এবং বীজতলা ৯৮% তৈরি হয়ে গেছে। আশা করি ১১০% অর্জিত হবে। এখন পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে রয়েছে। এ বছর আমার বিভিন্ন উপজেলা পল্লী বিদ্যুত ও সেচ কমিটির সদস্য সাথে মিটিং করছি। আশা করি এ বছর লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও কুমিল্লায় বেশি অর্জিত হবে।
ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট