মোঃ মুক্তাদির হোসেন,স্টাফ রিপোর্টার।
বাবাকে অপমান করায় বাড়িওয়ালার শিশুকে অপহরণ করে খুন।সুদের কিস্তি এবং ঘর ভাড়া পরিশোধে বিলম্ব হওয়া নিয়ে বাড়িওয়ালা ও ভাড়াটের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও দ্বদ্বের জেরে ভাড়াটে সোহাগর (২৫) বাবা, বোন ও স্ত্রীকে অপমানের প্রতিশোধ নিতে বাড়িওয়ালার শিশু তামজিদ (৯) শ্বাসরোধে হত্যার পর চাকু দিয়ে গলা কেটে সিরাজগঞ্জের এক বালির চরে মাটিচাপা দিয়ে পালিয়ে যায় সোহাগ। রোববার সকালে ঘাতক সোহাগকে টাঙ্গাইলের নাগরপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
রোববার বিকেল সাড়ে ৫ টায় গাজীপুর মহানগরীর গাছা থানা কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (জিএমপি’র) উপ-কমিশনার (অপরাধ) মাহবুব-উজ-জামান সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (জিএমপি’র) সহকারী কমিশনার (অপরাধ) হাফিজুল ইসলাম, গাছা জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) মাকসুদুর রহমান এবং গাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: ইব্রাহিম হোসেন।
ওই পুলিশ কর্মকর্তা জানান, ভিকটিম তামজিদ গাজীপুর মহানগরের গাছা থানাধীন কুনিয়া পাছর এলাকার ছোবান সরকারের ছেলে। সে টঙ্গী পশ্চিম থানাধীন সাতাইশ এলাকার মোকদ্দমাতুল হিফজ মাদ্রাসার হিফজ বিভাগের আবাসিক ছাত্র ছিল।
আসামী সোহাগ টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার তেপাড়িয়া গ্রামের মাখনের ছেলে। সে কুনিয়া পাছর এলাকায় ভিকিটিমের বাবা ছোবান সরকারের বাড়ীতে ভাড়া থেকে স্থানীয়ভাবে টাইলস্ মিস্ত্রীর কাজ করত।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (জিএমপি’র) গাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: ইব্রাহিম হোসেন জানান, মাদ্রাসা বন্ধ থাকায় ভিকটিম তামজিদ বাড়িতে বেড়াতে আসে।
শুক্রবার (১০ মার্চ) সন্ধ্যা ৭টায় আসামী সোহাগ ভিকটিমকে বেড়াতে যাওয়ার কথা বলে কৌশলে তার বাড়ীর সামনে থেকে সিএনজিতে তুলে নিয়ে যায়। পরে তার স্বজনেরা সম্ভ্যাব্য সকল স্থানে খোঁজখুজি করে সন্ধান না পেয়ে পরদিন শনিবার (১১ মার্চ) দুপুরে গাছা থানায় মামলা দায়ের করে। মামলা দায়েরের পর পুলিশ তাৎক্ষনিক সন্দেহভাজন আসামী হিসেবে সোহাগকে টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার তেপাড়িয়া গ্রামের তার নিজ বাড়ী থেকে গ্রেফতার করে।
পরে জিজ্ঞাসাবদে ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকরা করলে পুলিশ তার দেওয়া তথ্যে সিরাজগঞ্জের চৌহালি উপজেলার চৌদ্দরশি (খাস কাউলিয়া) গ্রামের শস্যক্ষেতের বালুর নিচ থেকে ভিকটিম তামজিদের মরদেহ উদ্ধার করে।
তিনি আরো জানান, আসামী সোহাগ ভিকটিমের বাবার বাড়ীতে গত দুই মাস আগে ভাড়ায় উঠে। ভিকটিমের মা দাদন ব্যবসা করতো। ভাড়াটিয়া সোহাগ ভিকটিমের মা’র কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা দাদন নেয় এবং ঘর ভাড়া বাকি ছিল। তাছাড়া আসামীর সহোদর বোন সুলতানাও ভিকটিমের মা’র কাছ থেকে ১৬ হাজার টাকা দাদন নেয় এবং আসামীর স্ত্রী সুমাইয়া মালিকের ঘর থেকে জামা-কাপড় চুরি করে নেয়। পরে তাদের কাছে দাদনের বকেয়া কিস্তি, ভাড়া এবং আসামীর স্ত্রীকে চোরের বউ বলে গালিগালাজ করে এবং সোহাগের বাবাকে ভিকটিমের মা অপমান করলে কান্নাকাটি করে। এর জেরে সোহাগ মালিকের ছেলে শিশু তামজিদকে অপহরণ করে হত্যা করে। পরে ভিকটিমের পরনের জামা-কাপড় খুলে উলঙ্গ করে মরদেহ বালুর গর্তে পুঁতে রাখে।
ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট